চোখ উঠা রোগের প্রকোপ বাড়ছে সরাইলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
মো: তাসলিম উদ্দিন, উপজেলা প্রতিনিধি সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশিত: সোমবার ৩রা অক্টোবর ২০২২ ০৪:২৭ অপরাহ্ন
চোখ উঠা রোগের প্রকোপ বাড়ছে সরাইলে

সরাইলে বাড়ছে চোখ উঠা বা চোখের প্রদাহ রোগীর সংখ্যা। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। তবে সব বয়সের মানুষকেই আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। প্রত্যেকটি এলাকায় এই রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরাইল সদরের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ময়না  বলেন, চোখ ওঠার পর থেকেই চোখে কাটা কাটা লাগে এবং চুলকায়। আলোর দিকে থাকাতে পারি না। ঘুম থেকে উঠে দেখি দুই চোখ জট লেগে আছে। তাই স্থানীয় হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে বেড়েছে এ রোগীর সংখ্যা। দেখা দিয়েছে চোখে ব্যবহৃত ড্রপ সংকট। 


চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে আর বর্ষায় চোখ উঠার প্রকোপ বাড়ে। একে বলা হয় কনজাংটিভাইটিস বা চোখের আবরণ প্রদাহ সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াছে। ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ বলছেন, আউটডোরে দেখানো রোগীদের ৩০ শতাংশই কনজাংটিভাইটিস রোগী। তবে এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। কনজাংটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য রুমাল, তোয়ালে, বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে এতে আক্রান্ত হয়। 


তিনি বলেন, অপরিষ্কার বা নোংরা জীবনযাপন চোখ ওঠার অন্যতম কারণ। চোখ ওঠা রোগে চোখ লাল হয়ে যায়।আর এমনটি হয় এই কনজাঙ্কটিভার রক্তনালিগুলো প্রদাহর কারণে ফুলে বড় হয়ে যাওয়া এবং তাতে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে। ঘুম থেকে ওঠলে চোখ আঠা আঠা লাগা, সব সময় চোখের ভেতর কিছু একটা পড়েছে এমন অনুভূতি, চোখ চুলকানো এবং জ্বালাপোড়া করা, আলোর দিকে তাকালে অস্বস্তি লাগা, সবকিছু ঘোলা ঘোলা দেখা, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখের কোনায় ময়লা জমা, চোখ ফুলে যাওয়া চোখ ওঠার লক্ষণ। দৃষ্টি ঝাঁপসা হলে, চোখ খুব বেশি লাল হলে, খুব বেশি চুলকালে বা অতিরিক্ত ফুলে গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এমন পরামর্শ চিকিৎসকদের।  


উপজেলায় সরেজমিনে গেলে অনেকেই বলেন , প্রথমে আমাদের বাড়ির এক শিশু আক্রান্ত হয়। তারপরই আমি আক্রান্ত হয়ে যাই। ফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ড্রপ ব্যবহার করেছি। এখন কমতে শুরু করেছে। আমাদের গ্রামেই প্রায় ২০ জনের মতো আক্রান্ত আছেন। একজনের কাছ থেকে আরেকজন আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অনেকে জানিয়েছেন।



সরাইল উপজেলা স্বাস্হ্যও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ কর্মকর্তা ডা.মো.নোমান মিয়া এ প্রতিনিধিকে বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। চোখ উঠা রোগকে আমরা ভাইরাস কনজাংটিভাইটিস বলে থাকি। এটা সিজনাল একটি রোগ। গরমে এই রোগ বেশী হয়। ঋতু পরিবর্তনের ফলে এই ভাইরাস ইনফেকশন হচ্ছে। 


ড্রপ সংকটের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ড্রপ আছে এবং অতিরক্ত ড্রপ বরাদ্দের জন্য লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।