বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসক ও নার্সদের সাথেও বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে রোগীর স্বজনরা। এক পর্যায়ে তারা আইসিইউতে হামলা চালায়। এতে সেখানে থাকা একটি ভেন্টিলেটর মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতিন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করে।
শনিবার (১৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে এ ঘটনা ঘটলে খবর পেয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরে চিকিৎসক ও নার্সদের কাছে ক্ষমা চেয়ে পার পায় রোগীর স্বজনরা।
হাসপাতাল ও প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জাানাগেছে, গত ১০ জুলাই রাত ২ টার দিকে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার বাসিন্দা মোঃ মনিরুজ্জামান (৪০) অক্সিজেন সিচুরেশন লেভেল খুবই কম নিয়ে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর গত ২ দিন আগে তার অবস্থা আরো খারাপ হলে করোনা ওয়ার্ডের আইসিইউতে নেয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বেলা সাড়ে ৩ টার দিকে তার মৃত্যু হলে স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এসময় মৃতের ভাই হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আরো ৩/৪ জন সেখানে হট্টগোল বাধায় এবং আইসিইউ’র একটি ভেন্টিলেটর মেশিন ও হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিনের ওপর হামলা চালায়।
এসময় তাদের হামলায় হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিনটি ক্ষতিগ্রস্থ না হলেও ভেন্টিলেটর মেশিনটি নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সদের সাথেও বাকবিতান্ডায় লিপ্ত হয়ে অশোভ আচরণ করেন রোগীর স্বজনরা।
পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে এবং রোগীর ৪ স্বজনকে আটক করে। পরবর্তীতে চিকিৎসক ও নার্সদের কাছে ক্ষমা চেয়ে পার পায় রোগীর স্বজনরা।
রোগীর স্বজনদের দাবি, তাদের রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তারা চিকিৎসকদের সহায়তা চান, তবে তাৎক্ষনিক তারা কোন সহায়তা পাননি। চিকিৎসক এসে রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, আইসিইউতে একই সময়ে আরো ৪ জন রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন ছিলো। তাদের জনবল সল্পতা থাকার পরেও তারা সবাইকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ অবস্থায় তারা ওই রোগীর কাছেও গিয়েছিলেন এবং ইসিজিও করান। কিন্তু রোগীর মৃত্যুর ঘোষনার পরপরই স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানান, চিকিৎসক ও নার্সদের সাথে কোন ধরণের অপ্রিতীকর ঘটনা ঘটেনি, তবে রোগীর মৃত্যুর খবরের পরপরই স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং একটি ভেন্টিলেটর মেশিনের ওপর আঘাত করে বসেন।
তিনি বলেন, এতে ভেন্টিলেটর মেশিনটিতে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। বিষয়টি জানার সাথে সাথে থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে তারা এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। আর ভেন্টিলেটর মেশিনটির ত্রæটির খবর সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে স্বজনদের বাক-বিতান্ডা হয়। এ নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে খবর পেয়ে তারা গিয়ে রোগীর চার স্বজনকে আটক করে।
তিনি আরো জানান, ওই স্বজনরা নিজেদের ভ‚ল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিত স্বাভাবিক রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।