খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মাদারীপুরের বক্ষব্যাধি ক্লিনিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: সোমবার ২২শে নভেম্বর ২০২১ ১১:০১ অপরাহ্ন
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মাদারীপুরের বক্ষব্যাধি ক্লিনিক

মাদারীপুর ও শরিয়তপুর জেলার ৩০ লাখ মানুষের জন্য নির্মিত একমাত্র সরকারি বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসক নেই। এছাড়া ১৭টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৮ জন। ফলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এর কার্যক্রম। এতে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ রোগীরা। এমন পরিস্থিতিতে দায় স্বীকার করে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, সমস্যা সমাধানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ভান্ডারীকান্দি এলাকার বাসিন্দা ৬০ ঊর্ধ্ব সেকেন্দার আলী চোকদার, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অসুস্থ থাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন জেলার একমাত্র বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে। সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও পাননি কোনো চিকিৎসকের দেখা।

 

শুধু সেকেন্দার আলী নন, তার মতো প্রতিদিন শত শত রোগী ফিরে যাচ্ছেন জেলার একমাত্র বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে। ৪ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে নেই বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক। ১৭টি পদের জুনিয়র কনসালটেন্ট, মেডিকেল অফিসার, ল্যাব টেকনোলেজিস্ট, সহকারী সেবকসহ ৯টি পদ খালি রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। 

 

বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে কফ পরীক্ষা করার যন্ত্র না থাকায় রোগীদের বাধ্য হয়ে আসতে হয় জেলা সদর হাসপাতালে। সেখানেও সীমিত সংখ্যক পরীক্ষা হওয়ায় বিপাকে পড়েন অনেক রোগী। সেকেন্দার আলী চোকদার অভিযোগ করেন, কখন ডাক্তার আসবে তার কোনো নির্দিষ্ট সময় কেউ বলছে না। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বসে আছি, শুধুই কষ্ট হচ্ছে।


মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট (ল্যাব) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, টিবি ক্লিনিক (বক্ষব্যধি হাসপাতাল) হাসাপাতাল থেকে কফ পরীক্ষা নমুনা পাঠালে এখানে পরীক্ষা করা হয়। দিনে মাত্র ১২টি পরীক্ষা করে তাৎক্ষণিক রিপোর্ট দেওয়া হয়। এখান থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট শতভাগ সঠিক।

 

মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন জানান, একজন চিকিৎসককে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে টিকিয়ে রাখা হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। জনবল সংকটের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে, শিগগিরই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

প্রসঙ্গত, মাদারীপুর ও শরিয়তপুর এই দুই জেলার মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য শহরের সৈয়দারবালী মৌজায় ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বক্ষব্যধি ক্লিনিকটি। সময়ের সাথে সাথে জন্যসংখ্যা বাড়লেও প্রতিষ্ঠানটিতে জনবল বাড়েনি আজও।