ঝিনাইদহ সরকারী হাসপাতালে নেই ডেঙ্গু পরীক্ষার রি-এজেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
আতিকুর রহমান, জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১০ই আগস্ট ২০২১ ০৬:০৪ অপরাহ্ন
ঝিনাইদহ সরকারী হাসপাতালে নেই ডেঙ্গু পরীক্ষার রি-এজেন্ট

ঝিনাইদহ জেলা ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে থাকলেও সরকারী হাসপাতালগুলোতে রি-এজেন্ট নেই। ফলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গুর পরীক্ষা হচ্ছে না। 



অথচ ২০১৯ সালে ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ব্যাপক হারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যু হয় বেশ কয়েকজনের। ২০১৯ সালের শেষ দিকে করোনা ভাইরাস দেখা দিলে ঝিনাইদহে ডেঙ্গু আতংক কমে আসে। 



চিকিৎসকরা জানান, ডেঙ্গু ও করোনার উপসর্গ এক হলেও চিকিৎসা ভিন্ন। ডেঙ্গু হলে ডাবিøইউ বিসি ও  প্লাটিলেট কাউন্ট কমে যায়। এর জন্য এনএস ওয়ান পরীক্ষা করতে হয়। পাঁচদিনের মধ্যে এই এন.এস-ওয়ান পজিটিভ হয়ে যায়। তারপর আই.জি.জি ও আই.জি.এম পরীক্ষা করতে হয়। পরের পরীক্ষা দুইটি ব্যায় বহুল।




 জেলার সরকারী হাসপাতালগুলোতে রি-এজেন্ট না থাকায় শহরের বেসরকারী প্যাথলজি ক্লিনিকগুলোর এখন পোয়াবারো। তারা ইচ্ছামতো মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। করোনা আর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মানুষ এমনিতেই আতংকের মধ্যে আছে। 




সাধারণ জ্বর আসলেও মানুষ করোনা ও ডেঙ্গুর পরীক্ষা করাচ্ছেন। কিন্তু সরকারী হাসপাতালে রি-এজেন্ট না থাকায় বেসকারী ক্লিনিকে ১২’শ টাকা দিয়ে পরীক্ষা করতে হচ্ছে রোগীদের। এতে অনেক গরীব রোগীরা পড়েছেন বিপাকে।




 ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস থেকে বলা হয়েছে ডেঙ্গুর রি-এজেন্টের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। হয়তো দ্রুতই চলে আসবে। 



চিকিৎসকরা জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে ডেঙ্গু রোগীর সাড়ে তিন’শ টাকায় একটি পরীক্ষা করেই রোগ সনাক্ত করা সম্ভব। আর ৪/৫ দিন পর আরো দুইটি পরীক্ষা করতে হয়, যা রোগীদের জন্য ব্যায়বহুল। 



সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মিথিলা ইসলাম জানান, রি-এজেন্ট ছিল কিন্তু ডেট নেই। চাহিদা পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই চলে আসবে। 



ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ হারুন অর রশিদ জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষার রিএজেন্ট রুটিন ওষুধ নয়। ঝিনাইদহ সদর হাসপালে রিএজেন্ট ছিল, কিন্তু সম্প্রতি ডেট চলে গেছে। আমরা রি-এজেন্ট এর চাহিদা পাঠিয়েছি। 



হাসপাতালের পরিসংখ্যান অফিসার আব্দুল কাদের জানান, ২০১৯ সালের ৬ জুলাই প্রথম মাহবুব নামে একজনের শরীরে ডেঙ্গুর জীবানু ধরা পড়ে। এরপর ৮ মাসে প্রায় ৮০০ রোগী সনাক্ত হয়। 




বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ উম্মে হুমায়রা কানেতা জানান, এখন জ্বর আসলে আর আগের মতো স্থির থাকা যায় না। জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া কেবলমাত্র একটি উপসর্গ। এর কারণ কোভিড-১৯, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া না-কি টাইফয়েড ? কোভিড মহামারির সঙ্গে ডেঙ্গু যুক্ত হলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। দুটো রোগের উপসর্গ এক হলেও চিকিৎসা পদ্ধতিতে আছে বিস্তর পার্থক্য। 




কারো যদি দুটি রোগ একই সঙ্গে হয়, সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য জটিলতা বাড়তে পারে। পাশাপাশি চিকিৎসা পদ্ধতির জটিলতাও অনেক। 



তিনি বলেন, কোভিড এ রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বেড়ে যায়। এজন্য রক্ত পাতলা করার ওষুধ ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে ডেঙ্গুতে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা বা ব্লিডিং টেনডেনসি থাকে। তাই রক্ত পাতলা করার ওষুধ দিলে আরো মারাত্মক পরিস্থিতি হবার আশঙ্কা থাকে।