রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে চিন্তার কারণ নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
তানভীর তালুকদার রাকিব
প্রকাশিত: রবিবার ২রা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে চিন্তার কারণ নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আশ্বস্ত করেছেন যে, রমজান মাসে তেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য পণ্যের সংকট হবে না। তিনি জানান, বর্তমান বাজারে তেল, চিনি, ছোলা এবং খেজুরের মজুত যথেষ্ট রয়েছে এবং কোনো ধরনের মূল্যবৃদ্ধি হবে না। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘খাদ্য পণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে তিনি এসব কথা বলেন।


শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “আমরা আশা করছি, ইনশাআল্লাহ রমজানে কোনো সমস্যা হবে না এবং দ্রব্যমূল্য বাড়বে না। আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে দাম পতিত হচ্ছে, তাতে আমাদের দেশে পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা বেশি।” তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি দেখে তিনি আশাবাদী যে, খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।


তিনি বলেন, সরকার প্রতিযোগিতা কমিশনকে আরও শক্তিশালী এবং স্বাধীন করতে চায়, যাতে বাজারে প্রতিযোগিতাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড না ঘটে। তিনি জানান, মন্ত্রণালয় চায় যে, প্রতিযোগিতা কমিশনের কাজকর্মের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না এবং তারা নিজেদের কাজ স্বাধীনভাবে করতে পারবে।


বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের অর্থনৈতিক নীতি একসময় ধনিক শ্রেণির সুবিধার্থে ছিল, কিন্তু তা সাধারণ মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় নয়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, গত ১৫ বছরে দেশে বড় কোনো বিনিয়োগ হয়নি, যার ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়নি এবং ট্যাক্স কালেকশনের বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে গেছে।


এছাড়া তিনি টিসিবির তালিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার মতে, টিসিবির উপকারভোগীদের মধ্যে অনেকেই ভুয়া। তিনি বলেন, প্রাথমিক যাচাইয়ের পর দেখা গেছে, ৪৩ লাখ উপকারভোগী ভুয়া। তার ধারণা, ভালোভাবে যাচাই করলে আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ ভুয়া উপকারভোগী শনাক্ত করা যাবে।


এ অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন।


শেখ বশিরউদ্দীনের বক্তব্য দেশের বাজার ব্যবস্থাপনা ও মূল্যতত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে নতুন দিক নির্দেশনা প্রদান করেছে। তার এই বক্তব্যে একদিকে যেমন দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তেমনি অন্যদিকে সরকারি নীতির প্রতি সাধারণ মানুষের অবিশ্বাস এবং অনিয়মের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তার মতে, বাজারে অনিয়ম কমাতে এবং উন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন আরও কার্যকরী পদক্ষেপ।