বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবের ঘটনার পরবর্তী আহতদের মধ্যে আরও ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের ব্যাংককে নেওয়া হচ্ছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১১টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইট তাদের নিয়ে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আহতদের মধ্যে তিনজন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এবং তিনজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল, তাই তাদের বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত, জুলাই বিপ্লবের পর আহতদের মধ্যে ২২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সরকারের মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে, যার উদ্দেশ্য আহতদের উন্নত চিকিৎসা প্রদান করা। ব্যাংককে নেওয়া ছয়জনের চিকিৎসা শুরু হবে দ্রুত, এবং তাদের চিকিৎসা খরচও সরকারের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।
এর আগে, সরকারি পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, আহতদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে, এবং আন্তর্জাতিক স্তরে তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরকার আহতদের শারীরিক এবং মানসিক পুনর্বাসনেও সহায়তা প্রদান করবে, যাতে তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে সমাজে ফিরে আসতে পারে। ব্যাংককে নিয়ে যাওয়া ছয়জনের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা খুবই গুরুতর ছিল, তাই তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, জুলাই বিপ্লবের সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে আসেন এবং সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। এ সময় অনেকেই পুলিশের গুলিতে আহত হন এবং কয়েকজন মারা যান। ঘটনার পর আহতদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে বিশেষ চিকিৎসা শিবির তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু কিছু গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়।
এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, “এই ধরনের ঘটনা আমাদের সমাজের জন্য দুঃখজনক, কিন্তু আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং আহতদের পুনর্বাসন আমাদের সরকারের প্রধান লক্ষ্য।”
প্রতিবেদন অনুসারে, ব্যাংককে নেওয়া ৬ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আগে থেকেই স্থিতিশীল ছিল, তবে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা পাবে। এর মাধ্যমে, সরকার প্রত্যেক আহত ব্যক্তির জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এই চিকিৎসায় আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারবে।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার খরচ বহন করা হবে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা আসবে না। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসার জন্য সরকার যতটুকু সম্ভব আন্তর্জাতিক স্তরে সহায়তা গ্রহণ করবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, সরকারের উদ্দেশ্য হলো শুধু আহতদের চিকিৎসা নয়, বরং তাদের মানসিক সমর্থনও নিশ্চিত করা, যাতে তারা তাদের জীবন ফিরে পেতে পারে।
এদিকে, ব্যাংককে নেওয়া আহতদের পরিবার সদস্যরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তারা আশা করছেন, তাদের প্রিয়জনরা দ্রুত সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসবে এবং তাদের জীবনে স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে। আহতদের পরিবারের সদস্যরা সরকারের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন এবং তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
সরকারের এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, তারা জনগণের কল্যাণে সচেষ্ট এবং তাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এর ফলে, জনগণ সরকারের প্রতি আস্থা বাড়াতে পারে এবং এই ধরনের কঠিন পরিস্থিতিতে সরকারের সহায়তা পাওয়ার আশা তৈরি হয়।
সামগ্রিকভাবে, জুলাই বিপ্লবের সময় আহতদের জন্য সরকার এই পদক্ষেপটি নিয়ে আসার মাধ্যমে তাদের প্রতি সহানুভূতি ও মানবিক সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার পুনঃব্যক্ত করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।