ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমণিকে এবার গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগে আদালতে মামলার সম্মুখীন হতে হলো। তার এক বছরের শিশুকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে গত ২ এপ্রিল এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গৃহকর্মী পিংকি আক্তার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শিশু দেখাশোনার চুক্তিতে পিংকি পরীমণির বাসায় আসেন। কিন্তু তাকে শুধু শিশুর দায়িত্ব নয়, বরং রান্নাসহ অন্যান্য গৃহস্থালির কাজেও নিযুক্ত করা হয়। ঘটনার দিন পরীমণি নাকি মেকআপ রুম থেকে মাদক সেবন করে এসে বাচ্চার জন্য দুধ তৈরি করা নিয়ে পিংকির ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে মারধর করেন।
পিংকির দাবি, পরীমণি তাকে বলেন—‘তুই আমার বাচ্চার জন্য দুধ কেন বানাচ্ছিস? এখন তুই ওকে সলিড খাবার দিবি।’ এরপরই গালাগাল ও হাতাহাতি শুরু হয়। অভিযোগে পরীমণির পাশাপাশি সঙ্গীতশিল্পী শেখ সাদীর নামও রয়েছে।
পরদিন ৩ এপ্রিল পিংকি ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। কিন্তু পুলিশ সহায়তা না করায় তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন। আইনজীবীর পরামর্শে তিনি মামলাটি সরাসরি আদালতে দায়ের করেন।
এই প্রসঙ্গে পরীমণির কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য না মিললেও পূর্বে তিনি একাধিকবার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘সব মিথ্যে, ষড়যন্ত্রমূলক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ তার দাবি, পিংকির আচরণে তার সন্দেহ হয়েছিল এবং তিনি নিজে থেকেই তাকে বিদায় করতে চেয়েছিলেন।
পরীমণি বলেন, ‘সে অসহায়ত্ব দেখালেও আসলে অনেক স্মার্ট। আমার বাসার লোকদের সঙ্গে গল্প করেছে, কাকে কাকে ছবি পাঠিয়েছে, কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখত—এসব তদন্ত করলেই সব বের হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি গৃহকর্মীদের ‘আপনি’ বলে ডাকি, অনেক বছর ধরে আমার বাসায় কেউ বদলায়নি। একজন চার-পাঁচ দিনের জন্য এসে এমন অভিযোগ করায় সন্দেহ জাগে।’
ঘটনাটি নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বিষয়টিকে পরীমণির ব্যক্তিগত জীবনের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আঘাত হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকে গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন তুলছেন।
এদিকে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কী সিদ্ধান্ত নেন এবং পুলিশ তদন্তে কী উঠে আসে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে সবাই।