গাজায় যুদ্ধবিরতির অপেক্ষায় ফিলিস্তিনিরা তাদের ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নিলেও ইসরাইলি বাহিনীর আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। খান ইউনিসে ইসরাইলি হামলায় এক পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছে, যার মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের বরাতে আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে। ইসরাইলি হামলার ধারাবাহিকতায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
গত ১৫ মাস ধরে চলমান সংঘাতে গাজার বিশাল অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হয়ে অস্থায়ী তাঁবুতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে ঘরে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন অনেকেই। তবে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর সতর্কতার মধ্যে দক্ষিণ থেকে উত্তরের দিকে যাত্রা বিপজ্জনক বলে জানা গেছে।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮.৩০ মিনিট থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি সফল করতে এবং জিম্মি মুক্তির প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে তারা প্রস্তত। অন্যদিকে, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের সামান্য অবশিষ্ট সম্পদ গুছিয়ে নিজেদের এলাকায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ইসরাইলি হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নারী ও শিশুরা। গাজায় বসবাসরত মানুষদের বেশিরভাগই খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সেবার অভাবে ভুগছেন। সংঘর্ষের ফলে ধ্বংস হওয়া ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের অনিশ্চয়তা রয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান ছাড়া শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ইসরাইলি বাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের অপারেশন চালিয়ে যাবে। এর মধ্যেই সংঘর্ষে ফিলিস্তিনি জনগণের ক্ষোভ আরও বেড়ে চলেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন। তবে তাদের এলাকা এখনও নিরাপদ নয় বলে সতর্ক করেছে ইসরাইলি বাহিনী। বিশেষত নেটজারিম করিডোর এলাকায় চলাফেরা বিপজ্জনক বলে জানানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধের মুখোমুখি এবং এর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ইসরাইলি হামলার অবসান না হলে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার নিশ্চিত না হলে এই সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।