১০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান এবং একাধিক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।পরিবার সূত্রে খবর, মাহফুজুর রহমান খান দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় ২৫ নভেম্বর তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এদিন সন্ধ্যায় খেতে বসলে তার কাশির সঙ্গে মারাত্মক রক্ত পড়া শুরু হয়। এরপর তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখেন চিকিৎসকরা। ২৮ নভেম্বর থেকে তার ফুসফুস ও পাকস্থলিতে থেমে থেমে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ অকার্যকর হয়ে পড়েছিল।
১৯৪৯ সালের ১০ মে মাহফুজুর রহমান খানের জন্ম হয়েছিল ঢাকার লালবাগে। স্কুলে পড়াকালীন সময় থেকে তিনি চিত্রগ্রহণে আগ্রহী ছিলেন। বাবার ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে তার চিত্রগ্রহণে হাতেখড়ি হয়। চিত্রগ্রহণ শেখার উদ্দেশ্যে তিনি প্রখ্যাত পরিচালক জহির রায়হান নির্মাণাধীন ‘লেট দেয়ার বি লাইট’-এর সেটে যান। এছাড়া রফিকুল বারী চৌধুরী ও আব্দুল লতিফ বাচ্চুর সেটে গিয়ে চিত্রগ্রহণের বিভিন্ন বিষয় শিখেন।মাহফুজুর রহমান আরেক প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক আব্দুল লতিফ বাচ্চুর শিষ্য ছিলেন।
তার অধীনে সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে ১৯৭০ সালে ‘দর্প চূর্ণ’ ও ১৯৭১ সালে ‘স্বরলিপি’ চলচ্চিত্রে কাজ করেন। প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে মাহফুজুর রহমানের প্রথম কাজ আবুল বাশার চুন্নু পরিচালিত ‘কাঁচের স্বর্গ’ (১৯৭২)। এরপর একে একে বহু জনপ্রিয় ছবিতে তিনি অত্যন্ত দক্ষ হাতে চিত্রগ্রাহকের দায়িত্ব সামলেছেন।দীর্ঘ কেরিয়ারে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক হিসেবে রেকর্ড ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন মাহফুজুর রহমান খান। আটবার পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার। তার ঝুলিতে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারও রয়েছে। জীবদ্দশায় তিনি আলমগীর কবির, আলমগীর কুমকুম, হুমায়ুন আহমেদ, শিবলি সাদিকদের মত চলচ্চিত্র পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।