চার বছর আগে একরকম শুন্য হাতে ছিলেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। ব্যাংকে ছিল এক হাজার টাকা, কৃষিজমি ছিল ২১ শতাংশ, মালিক ছিলেন ৮৭ হাজার টাকা মূল্যের মোটরসাইকেলের। ঘরে ছিল আড়াই লাখ টাকার আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিকস পণ্য এবং স্ত্রীর এক ভরি স্বর্ণালংকার। ওই সময় তার আয়ের উৎস ছিল কৃষি খাত থেকে আসা ৬ হাজার টাকা ও অভিনয় থেকে আসা ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এর বাইরে নিজের বাড়ি-গাড়ি কিছুই ছিল না।
তবে সময় বদলেছে। চার বছরের ব্যবধানে হিরো আলম হয়েছেন কোটিপতি। কিনেছেন কয়েক লাখ টাকার প্রাইভেট কার, ৯ শতক জমি কিনে বানিয়েছেন বাড়ি। তার ব্যাংক হিসাবে আছে ৩০ হাজার টাকা ও পারিবারিক সঞ্চয়পত্র করেছেন ৫৫ লাখ টাকার। কৃষিজমি কিনেছেন ৫০ শতাংশ। এছাড়া তার স্ত্রী হয়েছেন ১০ ভরি স্বর্ণের মালিক।
বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন কিনেছিলেন হিরো আলম। এতে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর হলফনামায় তার এসব সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে।
সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বগুড়া-৪ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন হিরো আলম। ওই সময় মনোনয়নপত্র ও হলফনামার সঙ্গে নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহে অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাব্য উৎস বিবরণী দাখিল করেছিলেন।
সেখানে তিনি নির্বাচনে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ের কথা জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে নিজের অভিনয় ও ব্যবসা থেকে ৫ লাখ এবং শ্বশুর, ফুফা ও ভগ্নিপতির কাছ থেকে আরও ৫ লাখ টাকা ধার করে নির্বাচনী ব্যয় মেটানোর কথা জানিয়েছিলেন। তবে এবারের নির্বাচনী ব্যয়ের উৎস জানা যায়নি।
হিরো আলমের আয় ব্যয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই জানে আমার কোনো কালোটাকা নেই। স্টেজ শো করে উপার্জন করি। চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও অভিনয় করি। নাটক, চলচ্চিত্র ও মিউজিক ভিডিও নির্মাণের ব্যবসা করি। ইউটিউব থেকে আয় করি। এসব আয় থেকেই সৎভাবে জীবন যাপন করছি। একটু একটু করে সঞ্চয় জমিয়ে কিছু করার চেষ্টা করছি। হলফনামায় সম্পদের যে তথ্য দিয়েছি, সবই সৎভাবে উপার্জিত। কোনো অসৎ রোজগারের অর্থ আমার নেই।
এদিকে রবিবার দুপুরে বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে ন্যূনতম ১% ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থনসূচক তালিকায় গরমিল থাকার কথা জানিয়ে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হিরো আলম বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করবো। সেখানে ব্যর্থ হলে হাইকোর্টে যাবো।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।