আত্মহত্যার স্ট্যাটাস রাবি শিক্ষার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার ৩রা আগস্ট ২০১৯ ০৭:৪৮ অপরাহ্ন
আত্মহত্যার স্ট্যাটাস রাবি শিক্ষার্থীর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রী আত্মহত্যা করবে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে স্ট্যাটাস দেয়। শনিবার দুপুর ১টায় স্ট্যাটাস দিয়ে তা আড়াইটার দিকে মুছে দেওয়া হয়। স্ট্যাসাস দেওয়া শিক্ষার্থীর নাম তাসমী তামান্না তৃষ্ণা। সে আইন বিভাগের মাস্টার্সে পড়ছেন। তার ফেইজবুক পেজে যেভাবে লিখেন তা তুলে ধরা হলো- ‘আমি তৃষ্ণা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে মাস্টার্স করতেছি। বাসা দিনাজপুর। একজনকে ভালোবাসতাম। সে অস্বীকার করেছে। আমাকে জোর করে ড্রাগ এডিক্ট, বেশ্যা, মাগির দালাল বানানো হয়েছে। আমার প্রেমিক আমাকে অস্বীকার করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমার অসুস্থ গার্ডিয়ানকে অপমান করেছেন। আমার প্রেমিকও করেছেন। বিয়ের মূলো ঝুলিয়ে দুই বছর থেকেছে আমার সাথে। অনেকের সাথে শোয়াইছেও। অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা স্টেটমেন্ট নিয়েছে আমাকে অপদস্থ আর নোংরা প্রুফ করার জন্যে। আমার বেঁচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। ভালো থাকবেন আপনারা সব সভ্য মানুষরা। বিনা অপরাধে অনেক শাস্তি পেয়েছি। আর বেঁচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে। আপনাদের ঘৃণা আর ভালোবাসা নিয়ে আমি চলে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর জন্যে কেউ দায়ী নয়।’ এই স্ট্যাটাসে তিনি এক যুবকের সঙ্গে দুটো ছবি জুড়ে দেন। ওই যুবকের নাম শাহনেওয়াজ প্রিন্স। তিনি তৃষ্ণার প্রেমিক বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহনেওয়াজ প্রিন্স বলেন, ‘ওই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট আমাকে অনেকে পাঠিয়েছে। আমাদের পছন্দ ছিল। পরিবারের কথা চলেছে। বর্তমানে তেমন রিলেশন নেই। তিনি আপাতত ঢাকায় তার বোনের বাসায় আছেন বলে আমি জানতে পেরেছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘তার আইডি হ্যাক হয়েছিল বলে আমি জানতে পেরেছি। আর একটা বিষয় হচ্ছে, একটা কারণে (স্বর্ণের দোকানে আংটি চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ায়) তাকে (তৃষ্ণা) কয়েকদিন আগে পুলিশ আটক করেছিল। এ কারণে হয়তো হতাশায় ভুগছিলো। আমার মনে হয় ওর মানসিক চিকিৎসা করানো দরকার।’ জানতে চাইলে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানতাম না। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই তার কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।’

ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু বলেন, তৃষ্ণা কয়েকদিন আগে পুলিশের হাতে আটক হয়। এরপর আমি ও সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস মিলে তার সঙ্গে কথা বলেছি। আগেও আমরা তার সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছি। কাউন্সেলিং করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। একজন শিক্ষার্থী খারাপ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় না। আর আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে মেয়েটা অনেক মেধাবী। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি তার স্বাভাবিক জীবন বাধাগ্রস্থ করেছে। তার ব্যক্তিজীবনে হতাশ। তারপরও আমরা ওর পরিবারকে ডেকে একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব