রাবি শিক্ষার্থীদের ১২ ঘন্টার আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ২৮শে জুলাই ২০১৯ ০৭:১৮ অপরাহ্ন
রাবি শিক্ষার্থীদের ১২ ঘন্টার আল্টিমেটাম

‘শিক্ষা কোনো পণ্য নয়, শিক্ষা আমাদের অধিকার। সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের শিক্ষার অধিকার রয়েছে। তাই সমাজের সবার কথা চিন্তা করে ভর্তি ফরমের মূল্য নির্ধারণ করা উচিত ছিল। অন্যবারের তুলনায় এবার ইউনিট কমানো হয়েছে তাই সবকিছুর খরচও কম হবে। এতে প্রশাসনের ভর্তি ফরমের এরকম মূল্য নির্ধারণ করার পিছনে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনো কারণ দেখছি না। এতে করে অনেক গরিব মেধাবী শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্থ হবে, যেটা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এ সময়ের মধ্যে যদি প্রশাসন ভর্তি ফরমের মূল্য না কমায় তাহলে শিক্ষার্থীরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি ফরমের উচ্চমূল্য নির্ধারণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও পরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেছে শিক্ষাবাণিজ্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুর দেড়টায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এসময় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ সাকি বলেন, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফরমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯৮০ টাকা। আমরা সবাই জানি, রাষ্ট্র এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত। দেশের উত্তরবঙ্গে এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। ঠিক এমন সময় প্রশাসন এমন অনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেটা কখনো কাম্য নয়। প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবসাবান্ধব। আজ রাকসু নেই বলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলার কেউ নেই। আর প্রশাসন চাই না যে রাকসু হোক, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কেউ কথা বলুক। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সচেতন হতে হবে। এরকম অমানবিক সিদ্ধন্তের এখনই লাগাম টানতে হবে। নাহলে এ বছর যেটা ২ হাজার টাকা সেটা আগামী বছর হবে ৪ হাজার টাকা। প্রশাসনকে বুঝাতে হবে শিক্ষা কোনো বাণিজ্য নয়, শিক্ষা সামাজিক অধিকার।

রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শোভা বর্ধনের জন্য একটা বিশাল অংকের টাকা খরচ করা হচ্ছে। এগুলো করা হচ্ছে এ দেশের কৃষক শ্রমিক, দিনমজুর সবার টাকায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেভাবে ভর্তি ফরমের মূল্য নির্ধারণ করেছে তাতে মনে হয় যে তাদের ছেলেমেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কোনো অধিকার নেই। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে যদি এত টাকা লাগে তাহলে গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করবে কিভাবে? তাই প্রশাসনের এরকম অমানবিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দেলন গড়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে।

ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী রনজু হাসানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা ও আরেফিন মেহেদী, ম্যাটারিয়াল সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী রিদম শাহরিয়ার, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী হরোপাদিত্য প্রমুখ। এসময় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় একজন ভর্তিচ্ছুর প্রাথমিক আবেদন করতে ৫৫ ও চ‚ড়ান্ত আবেদন করতে ১৯৮০ টাকা লাগবে।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব