উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটামের মধ্যেও ৮ম দিনের মতো শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর ফাঁকে ফাঁকে শ্লোগানের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার অষ্টম দিনের আন্দোলন করেন তারা। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। গানে গানে প্রতিবাদ জানান তারা। গানের ফাঁকে ফাঁকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে চলে শ্লোগান। বিকেলে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী আলপনা আঁকার কর্মসূচি গ্রহণ করেন তারা। এর আগে, শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে গত সোমবার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ২৫টি অনিয়ম-দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অযোগ্যতা উল্লেখ করে তার পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
আগামীকাল বুধবার দুপুর ১টায় শেষ হবে শিক্ষার্থীদের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম। আল্টিমেটামের মেয়াদ পর্যন্ত প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক কর্মসূচির পাশাপাশি আলপনা আঁকা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা গণিত বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত। গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের উপাচার্য ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই কটূক্তির প্রতিবাদ এবং ওই মন্তব্য প্রত্যাহারসহ ১০ দফা দাবিতে ২৭ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
ওইদিন (২৭ মার্চ) রাতে উপাচার্য তার একক ক্ষমতাবলে ২৮ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ এবং ওইদিন (২৮ মার্চ) বিকেল ৫টার মধ্যে সকল আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আবাসিক হলে থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এ অবস্থায় গত ২৯ মার্চ উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক তার বক্তব্যের জন্য গণমাধ্যমে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।
সবশেষ গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। তবে কারোর কথায় পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক। একমাত্র রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী চাইলেই পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করার কথা জানিয়েছেন তিনি। তার দাবি এই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নেই। তিনি যাতে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হতে না পারেন সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে একটি মহল গুটি কয়েক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন উস্কে দিচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।