আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দলটি জুলাই-আগস্টের গণহত্যার জন্য ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাদের কোনো বিক্ষোভ করতে দেওয়া হবে না। বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোনো ন্যায্য বিক্ষোভ বন্ধ করেনি, বরং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। তবে আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ড বিবেচনায় তাদের বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হতে পারে না।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিস্ট দলকে কি বিক্ষোভের সুযোগ দেওয়া উচিত? তিনি দাবি করেন, জুলাই-আগস্টের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল, যেখানে বহু শিক্ষার্থী ও শিশু নিহত হয়েছে। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলকে গণহত্যার জন্য দায়ী করেন এবং বলেন, এই হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমা চাইতে হবে।
তিনি আরও বলেন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। নিরপেক্ষ একটি প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার সরকারের ঘনিষ্ঠরা ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ গুম হয়েছেন এবং তিন হাজারের বেশি মানুষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। শাপলা চত্বরের সমাবেশ এবং মাওলানা সাঈদীর বিচারিক রায়ের পর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালানো হয়েছিল। এ সময় পুলিশ বাহিনী দলীয় বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল এবং লক্ষাধিক বিরোধী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়া হয়।
প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ যদি গণহত্যা, দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য ক্ষমা না চায় এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি না করে, তবে তাদের কোনো কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হবে না। তিনি মিত্রবাহিনীর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, মিত্রবাহিনী কি নাৎসিদের বিক্ষোভ করতে দিয়েছিল?
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কোনো দেশ খুনি ও দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় ফেরার সুযোগ দেয় না। বাংলাদেশের জনগণ যদি আওয়ামী লীগের নামে কোনো আন্দোলন দেখতে পায়, তবে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। সরকার দেশকে অস্থিরতা ও সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার কোনো প্রচেষ্টা বরদাশত করবে না।
শেষে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ব্যানারে কেউ যদি বেআইনি বিক্ষোভের চেষ্টা করে, তবে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং কোনো অস্থিতিশীলতা মেনে নেওয়া হবে না।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।