সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি পৌর সদরে অবস্থিত আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ আধুনিক নির্মাণশৈলী ও এক ভিন্ন রূপে দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। প্রায় আড়াই বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই মসজিদটি যে কেউ প্রথম দেখবে, তার মনে হবে যেন সৃষ্টির সঙ্গে স্রষ্টার এক অপূর্ব মেলবন্ধন। মসজিদটি শুধু তার সৌন্দর্য দিয়ে নয়, বরং ধর্মীয় উপাসনায়ও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এখানে রমজান মাসে বিশেষ করে তারাবি নামাজ আদায় করতে বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক মুসুল্লি আসেন।
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মুকুন্দগাতী গ্রামের শিল্পপতি মোহাম্মদ আলী সরকার মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু করেন, তবে ২০২0 সালের ২ আগস্ট তার মৃত্যুর আগে এই মসজিদটি উদ্বোধন হতে পারেনি। পরবর্তীকালে তার ছেলে এবং পরিবারের সদস্যরা মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের ২ তারিখে জুমার নামাজের মাধ্যমে এই মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়। মোট ৯ বছর ধরে আধুনিক নির্মাণ কৌশল এবং দেশের পাশাপাশি বিদেশী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছে।
মসজিদটির ভেতরের বৈশিষ্ট্যও অত্যন্ত মুগ্ধকর। মসজিদের গম্বুজটি বিশাল এবং ছাই রঙের মনোরম। মেঝে সাদা রঙের ঝকঝকে টাইলস দ্বারা ঢাকা এবং পিলারগুলো মার্বেল পাথরের দ্বারা সাজানো। তৃতীয় তলায় গম্বুজের সঙ্গে লাগানো আলোকবাতিগুলি মসজিদের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদের দুই পাশে রয়েছে ১১ তলা সমতুল্য উচ্চতার মিনার, যা থেকে আজানের ধ্বনি পুরো এলাকা ছড়িয়ে পড়ে।
এছাড়া মসজিদের কোষাধ্যক্ষ মো. আনিস রেজা জানিয়েছেন, মসজিদ পরিচালনার জন্য ২ জন ইমাম, ২ জন মোয়াজ্জিন এবং ৬ জন খাদেম নিয়োজিত রয়েছেন। প্রতিদিন প্রায় ৪-৫শ মুসুল্লি এখানে নিয়মিত নামাজ আদায় করে। বিশেষ করে, রমজান মাসে মসজিদে ইফতার ও তারাবি নামাজে ১২ রাকাত বিরতিতে মুসুল্লিদের আপ্যাপ্তির জন্য ফল, কেক ও বোতলজাত পানি সরবরাহ করা হয়।
মসজিদের সার্বিক সৌন্দর্য শুধু দিনেই নয়, রাতেও আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মসজিদটির আলোকসজ্জা এবং ঝাড়বাতি এটিকে রাতের অন্ধকারে একটি অপরূপ দৃষ্টির সৃষ্টি করে। মসজিদের খাদেমরা জানান, মসজিদের ভিতর ও বাইরের আলোকসজ্জা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে এবং নামাজ আদায় করার সময় এক শান্তিময় পরিবেশ সৃষ্টি করে।
এদিকে, আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা কিবরিয়া বলেন, মসজিদটি একসঙ্গে প্রায় ৭ হাজার মানুষের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রাখার ফলে, এখানে প্রচুর মুসুল্লি ও দর্শনার্থী আগমন ঘটে। বিশেষত, রমজান মাসে মসজিদটির প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।