রাজধানী ঢাকায় গত কয়েক সপ্তাহে সবজির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা ক্রেতাদের জন্য স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে যে, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, খিঁড়া ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, করলা (হাইব্রিড) ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, ঝিঙা, লাউসহ অন্যান্য সবজি দামের ক্ষেত্রে পতন দেখা যাচ্ছে।
এখনকার বাজারে সবজির দাম কমে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে আনন্দের উপলক্ষ তৈরি হয়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বেসরকারি চাকরিজীবী কামাল মিয়া জানান, "যেহেতু সবজির দাম কমেছে, আমি এখন অনেকটা ইচ্ছেমতো সবজি কিনতে পারছি, যা আগে সম্ভব ছিল না। তিন মাস আগে সবজির দাম ছিল অনেক বেশি, তখন আমি অল্প পরিমাণে কিনতাম।"
এদিকে আলু ও পেঁয়াজের বাজারেও দাম কমেছে। নতুন আলু বর্তমানে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের তুলনায় অনেক সস্তা। পাইকারি বাজারে আলু ১৮ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এবং আড়তেও বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকায়। পেঁয়াজের বাজারে কিছুটা পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তবে এটি সব সময় সঠিকভাবে বজায় থাকে না।
সবজি, আলু এবং পেঁয়াজের দাম কমানোর পেছনে আমদানি বাড়ানো ও বাজার মনিটরিং কার্যক্রমকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন ক্রেতারা। তারা আশা করছেন, যদি আমদানি বাড়ানো হয় এবং বাজারের উপযুক্ত মনিটরিং করা হয়, তবে দাম আরও কমবে এবং সাধারণ ভোক্তারা এর সুফল পাবে।
তবে চালের বাজারে এখনও অস্থিরতা রয়ে গেছে। মিনিকেট চাল বর্তমানে ৮০ টাকা কেজি, আটাইশ চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২ থেকে ৫৬ টাকা, এবং নাজিরশাইল ৭৬ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পোলাও চালের দাম ১১৬ থেকে ১১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা অনেকটা উচ্চ।
তেলের বাজারেও দাম বাড়ানোর পরেও অস্থিরতা কাটেনি। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কিছু দোকানে পাঁচ লিটার তেল পাওয়া গেলেও, এক ও দুই লিটারের তেলের বোতল খুবই সীমিত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। এতে দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। খোলা সয়াবিন তেল কেজি হিসেবে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এই তেল এখনও অনেক দোকানে উপলব্ধ।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন যে, কোম্পানিগুলো পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করছে না, আর অনেক সময় তেল কিনতে গেলে ক্রেতাদের অন্য পণ্যও কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। এ কারণে বাজারে কিছুটা সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে।
এদিকে, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। ৯ ডিসেম্বর তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়েছিল, এবং সম্প্রতি আবারও দাম বাড়ানোর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এসব কারণে চাল এবং তেলের বাজারে অস্থিরতা এখনও বিদ্যমান, যা সাধারণ ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।