প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ০:৫৭
কুড়িগ্রামে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলায় আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম ওরফে মসলা শহিদুল নামের দুই ভুয়া সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কুড়িগ্রাম পৌর শহরের তালতলা রোডের গাছবাড়ি সংলগ্ন কৃষ্ণপুর কামারপাড়া ও মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ফারাজিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার সকালে তাদেরকে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আলমগীর হোসেন মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ফারাজিপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে। শহিদুল ইসলাম ওরফে মসলা শহিদুল কুড়িগ্রাম পৌর শহরের গাছবাড়ি সংলগ্ন কৃষ্ণপুর কামারপাড়ার মৃত করিমুল্লার (জোগলা) ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জানুয়ারী কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের রতনপল্লী এলাকায় ধরলা নদীর তীর রক্ষা বাধের নির্মান কাজ চলাকালীন সময় ওই দু'জন সাংবাদিক পরিচয়ে উপস্থিত হন। সেখানে এসকে এমদাদুল হক আল মামুন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাব ঠিকাদার জাহিদুল ইসলামের নিকট এক লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং চলমান কাজ বন্ধ করে দেয়।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা জাহিদুল ইসলামের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে তার কাছে থাকা শ্রমিকদের মজুরির ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৩০ জানুয়ারী আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলামকে আসামী করে সদর থানায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহিদুল ইসলাম আগে কুড়িগ্রাম আদর্শ পৌর বাজারে মসলা বিক্রি করতেন। লেখাপড়া না থাকলেও তিনি হঠাৎ করেই নিজেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দিতে শুরু করেন। সাংবাদিক পরিচয়ে তিনি বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে দীর্ঘদিন যাবত চাঁদাবাজি করে আসছিলেন।
অপরদিকে আলমগীর হোসেন আগে জর্জকোটের বাইরে রাস্তার পাশে কম্পিউটার কম্পোজ ও ফটোকপির ব্যবসা করতেন। পরে তিনিও সাংবাদিক পরিচয়ে শহিদুল ইসলামের সাথে যুক্ত হয়ে একই কায়দায় বিভিন্ন এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন।
মামলারবাদী জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ২২ জানুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম মোগলবাসা ইউনিয়নের রতনপল্লী এলাকায় আসে সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ধরলা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের চলমান কাজ বন্ধ করে দেয়। সে সময় কাজ বন্ধ করার কারণ জানতে চাইলে তারা দুজনে আমার নিকট এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং টাকা দেয়ার পর কাজ করতে বলে।
আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম অতর্কিত আমার উপর হামলা করে আমার কাছে থাকা শ্রমিকদের মজুরীর ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় স্থানীয় লোকজন ও শ্রমিকরা এগিয়ে এলে তারা আমাকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, মামলার ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।