প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১:৫৫
কুমিল্লা দেবীদ্বারে ভাইকে অপহরণ ও মুক্তিপন আদায়ে দায়ের করা মামলার অভিযুক্তরা জামিনে এসে তার প্রতিবন্ধী যুবতী(২০) বোনকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে, এসময় তার বৃদ্ধ চাচা আব্দুল আলিম বাঁধা দিতে গেলে তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মক আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার বিকেল ৩টায় উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা গ্রামের সিরাজ মেম্বারের বাড়িতে। ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। এ পরিস্থিতিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বলে জানিয়েছেন হামলার শিকার পরিবারটি।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার দিন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অপহরণ মামলার প্রধান অভিযুক্ত একই বাড়ির শাহজাহান মিয়ার পুত্র আবুল কাসেম রনি(২৫) অপহরণ মামলার বাদীর বোন শারীরিক তিবন্ধী (২০) যুবতীকে প্রকাশ্য দিবালোকে এক দোকানের সামনে টেনে হেচড়ে, মারধর এবং পরিধেয় কাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এসময় প্রতিবন্ধী যুবতীর চাচা আব্দুল আলিম(৬০) বাঁধা দেয়ায়- আবুল কাসেম রনি(২৫), তার পিতা মোঃ শাহজান মিয়া ও তার অপর ২ ভাই আবুল বাশার(৩৫), আবুল হোসেন(৩০) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠির আঘাতে মারাত্মক আহত ও জখম করে।
আহত আব্দুল আলিম(৬০) উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা গ্রামের -সিরাজ মেম্বারের বাড়ির মৃত চানমিয়ার পুত্র।
আব্দুল আলিমকে মারধরের সময় স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন করলে দেবীদ্বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত অভিযুক্তরা কেউ গ্রেফতার হয়নি।
মারাত্মক আহত আব্দুল আলিমকে প্রথমে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
স্থানীয়রা আরো জানান, উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের পুত্র রুবেল (১৮) এর সাথে একই বাড়ির আবুল কাসেম রনীর স্ত্রী(১৮)’র সাথে পরকিয়া সম্পর্ক ছিল। ওই ঘটনায় রুবেলের পরিবারের সাথে আবুল কাসেম রনীর পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এরই মধ্যে নিজ ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে রুবেল রণীসহ ৫জনকে অভিযুক্ত করে দেবীদ্বার থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। সাধারন ডায়েরী নং-৩৩, তারিখ-০১/০৬/২০২২ইং। পরবর্তীতে রুবেল তাকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে আদালতে একটি অপহরণ মামলাও দায়ের করেন। ওই মামলার ধার্য্য তারিখ ছিল গত বুধবার। প্রতিপক্ষ হাজিরা শেষে বাড়িতে আসার পরই শ্লীলতাহানী ও বৃদ্ধকে আহত করার ঘটনা ঘটে।
অপহরণ মামলার বাদী রুবেলের বোন প্রতিবন্ধী(২০) যুবতী জানান, রনীর স্ত্রীর সাথে আমার ভাইয়ের পরকীয়া আছে বলে ভাইকে অপহরণ ও হত্যার চেষ্টা করেছিল, তাই আমি রনীর স্ত্রীকে বলেছিলাম তোমার পেটের সন্তান যেহেতু আমার ভাইয়ের তাই তুমি অমাদের ঘরে চলে আস। এ কথা শুনে রনী আমাকে বেধরক মারধরই নয়, প্রকাশ্য দিবালোকে আমার পরনের কাপড় ছিড়ে লাঞ্ছিত করে। আমার চাচা আব্দুল আলিম আমাকে রক্ষা করতে এলে রনী ও তার বাবাসহ আরো ২ ভাই মিলে কুপিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক যখম করে।
রনীর স্ত্রী(১৮) বলেন, আমাকে নিয়ে যে কথা বলা হচ্ছে তা মিথ্যে, বানোয়াট। আমার স্বামীসহ যাদের অপহরণ মামলা দিয়েছে তাও সাজানো।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, ওই হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগপত্র পেয়েছি। দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এস,আই) মিজানুর রহমানকে তদন্তসাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা পেলে আজই মামলা দায়ের করার কথা বলে দিয়েছি।