আশাশুনিতে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ, দেখার কেউ নেই!

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: শনিবার ২৮শে মে ২০২২ ০৫:৩৭ অপরাহ্ন
আশাশুনিতে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ, দেখার কেউ নেই!

আশাশুনি উপজেলার অধিকাংশ মৎস্য সেটে ও ডিপোয় বাগদা চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশকৃত করা মাছ ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে।  কেউ নির্ভেজাল বাগদা চিংড়ী খেতে চাইলে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অপদ্রব্য পুশকৃত মাছ বিদেশে রপ্তানী হলে রপ্তানী মার্কেট হারানোর শংকা বিরাজ করছে। 


বাগদা চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশের ঘটনা আশাশুনিতে নতুন নয়। প্রতি বছরই অধিকাংশ মাছের ডেিপা, মাছের ব্যাপারীর নিজস্ব ঘর ও মৎস্য সেটে চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশ করে থাকে। জেলি, ময়দা, সাবু, বার্লি, নোংরা পানি, পুইশাকের পাতার রসসহ ক্ষতিকর দ্রব্যাদি চিংড়ীতে পুশ করে ওজন বাড়ানো হয়।  অপদ্রব্য মাছের ভিতরে ধরে রাখার জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখা, বরফের মধ্যে রাখা হয়ে থাকে। পানিতে ভিজিয়ে ডুবিয়ে রাখা ও বরফের মধ্যে রেখে পলিথিন দিয়ে আটকানো বা পানি সরতে না পারে এমন পাত্রে করে চিংড়ী বহন করে মৎস্য সেটে আনা হয়ে থাকে।


 এভাবেই প্রশাসন, মৎস্য দপ্তরসহ দেখভাল করা কর্তৃপক্ষের চোখ ফাকি দিয়ে কিংবা বিশেষ কোন উপায়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মৎস্য সেটে ও পরে ট্রাকে লোড দিয়ে খুলনা, ঢাকা, চিটাগাংসহ বিভিন্ন স্থানে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। এতে যেমন চিংড়ী মাছ গুলো খাবার অযোগ্য এবং ব্যাকটেরিয়া বহন করে মানুষের জন্য খাদ্য হিসাবে চলে যাচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও ভোক্তাদেরকে চরম ভাবে ঠকানো ও খাবার অযোগ্য খাদ্য হিসাবে ব্যবহারে বাধ্য করা হচ্ছে। 


ছোট ফড়িয়া, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে একাজের সাথে জড়িত বিরাট গোষ্ঠী শক্ত অবস্থানে থেকে বাড়িতে, ডিপো, মৎস্য সেটে এমনকি ট্রাকে বহনকালে পথিমধ্যে সকল প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সামাল দিতে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনিয়ম অপ্রতিরোধ্য অবস্থায় নিয়মে পরিণত করে ঠিকঠাক ভাবে কাজ সম্পন্ন হয়ে আসছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চিংড়ী রপ্তানির সুযোগ। সম্প্রসারিত না হয়ে সংকুচিত হওয়া এবং চিংড়ীর কদর বিদেশে কমতে শুরু করেছে বলে সচেতন মহল মনে করেন। 


এব্যাপারে সেট কর্তৃপক্ষ ও ডিপো কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারা জানান, অপদ্রব্য পুশকৃত মাছ না আনতে বারবার নিরুৎসাহিত করা হয়ে থাকে। মাছ না কিনতে চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এক এলাকায় না কিনলে অন্য এলাকায় চলে যায়। এজন্য বাজার ঘোলাটে হয়ে থাকে। তাদের দাবী চিংড়ী ক্রয় বিক্রয় সকল এলাকায় একযোগে পুশবিরোধী কার্যক্রম হাতে নেওয়া প্রয়োজন। তখন কোন এলাকায় চলতে না পারলে ব্যবসায়ীরা পুশ বন্ধ করে দেবে। এছাড়া রপ্তানি কাজের সাথে জড়িতরা যদি পুশকৃত মাছ ক্রয় না করেন, তাহলেও পুশ বন্ধ হয়ে যাবে। 


উপজেলা মৎস্য অফিসে কথা বললে তারা জানান, তাদের সীমিত জনবল নিয়ে প্রতি বছর কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, সচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনাসহ প্রতি নিয়ত কাজ করা হচ্ছে।