নওগাঁর মহাদেবপুরে ভ্যান চালক হাসান আলী (১৭) কে গলা কেটে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই সাথে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় মূল আসামি এখলাছ হোসেন (২১) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে জেলার মান্দা উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের মদনচক গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে মহাদেবপুর উপজেলার সভাপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের মোজাফফর হোসেনের ছেলে।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া এতথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে চার্জার ভ্যান নিয়ে ভাড়া মারার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় হাসান আলী। সময়মত হাসান আলী বাড়ি না ফিরলে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খুঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরের দিন ২০ তারিখ রবিবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার গোফানগর শাবইল মোড়ের একটি ধান ক্ষেত থেকে গলাকাটা অবস্থায় তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হাসান আলীর বাবা আহাদ আলী মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করে।
পুলিশ সুপার বলেন , এখলাছ হোসেনকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামীরা নিয়মিত নেশা করতো। নেশা করার জন্য টাকার প্রয়োজন ছিল। যার কারনে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে চার্জার ভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুঞ্জবন মোড় পেট্রল পাম্পের সামনে চার্জার ভ্যান স্টান্ড থেকে ৩০ টাকা ভাড়ায় খাজুর বাজারে যাওয়ার কথা বলে হাসান আলীর চার্জার ভ্যান ভাড়া করে। পরে সেখান থেকে শাবইল মোড় পর্যন্ত দিয়ে আসতে বলে। শাবইল মোড়ে পৌঁছলে হাসান আলীর গলায় ছুরি ধরে চার্জার ভ্যান থামাতে বলে। এসময় হাসান আলী চার্জার ভ্যান থামালে এখলাছের সহযোগীসহ ভ্যান থেকে নামিয়ে পেছন থেকে হাসান আলীর গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করে লাশ রাস্তার পাশে ইরি ধান ক্ষেতে ফেলে দিয়ে চার্জার ভ্যান নিয়ে চলে যায়।
পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া আরো বলেন, গতকাল (সোমবার) দুপুরে খাজুর ইউনিয়নের ছাতুনতলী হাটে রক্ত মাখা একটি চার্জার ভ্যান নিয়ে এক ব্যক্তিকে দেখা যায় এমন সংবাদের ভিত্তিতে মহাদেবপুর থানা পুলিশ দ্রুত সেখানে উপস্থিত হয়ে ময়নুল ইসলাম নামে একজনকে রক্তমাখা চার্জার ভ্যানসহ আটক করে। পরে মইনুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, শনিবার রাত ৯টার দিতে তার পরিচিত চার্জার ভ্যান চালক এখলাছ হোসেন ভ্যানটি নিয়ে এসে বিক্রি করে দিতে বলে। ময়নুলের দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মান্দা উপজেলা থেকে অভিযুক্ত এখলাছ হোসেনকে গ্রেফতার করে। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য আদালতে হাজির করা হবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) গাজিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাবিনা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সুরাইয়া খাতুন, মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন, সদর মডেল থানার ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েলসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।