বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের নাম ভাঙিয়ে হজ্জ্বে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে মোবাইলে টাকা দাবি করা প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটককৃত খান আবি আব্দুল্লাহ টুকু বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোড এলাকার আবু সালেহ ধলু মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় যুবায়ের আব্দুল্লাহ, কাউনিয়া থানায় আসিফ মাহামুদ হিমু, বন্দর থানায় মীর বাহাদুর হোসেন এবং এয়ারপোর্ট থানায় সালমান রাশেদ বাদী হয়ে পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করেন। যুবায়েরের মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী মডেল থানার এসআই নূর ইসলাম গৌরনদী থেকে টুকুকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। চার থানায় দায়েরকৃত ৪টি মামলায় তাকে আসামী করা হবে বলে থানা সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এসআই নূর ইসলাম জানান, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতারকের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। এরপর গৌরনদী থানা পুলিশের সহযোগিতায় শুক্রবার সকাল ১০টায় গৌরনদী উপজেলা বাজারে অভিযান চালিয়ে টুকুকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দুপুরে থানায় নিয়ে আসা হয়।
এসআই নূর আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে টুকু স্বিকার করেছে মোবাইলের মাধ্যমে প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের নাম ভাঙ্গিয়ে সে বিভিন্ন জায়গায় টাকা চেয়েছে। এ ঘটনায় যুবায়েরের দায়েরকৃত মামলায় টুকুকে আসামী করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মার্চ একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদিজা বেগমের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে কিছু সংখ্যক লোককে সরকারিভাবে হজে পাঠানোর জন্য বাছাই করা হয়েছে বলে জানানো হয়। তাতে খাদিজার নামও রয়েছে বলে জানায় প্রতারক। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য প্রতারক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম পরিচয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলায়। সে কথা বলার আগে ‘‘প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম বলছি’’ বলে কথা শুরু করে।
প্রতিমন্ত্রী পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি খাদিজার কাছে ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করার জন্য বলে। এরপর ৩ মার্চ বিকাল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে বরিশাল সার্কিট হাউসে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়। সেখানে সরকারিভাবে হজে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবাইকে ৬০ হাজার টাকার একটি চেক দেওয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব টাকা পাঠানোর তাগিদ দেয় প্রতারক চক্র।’
বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য খাদিজা প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী শফিকুল ইসলাম পিন্টুর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দেন। তখন পিন্টু তাকে জানান, এটা প্রতারক চক্রের কাজ। এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি। তিনি ওই নারীকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দেন। একইভাবে বেশ কিছু ব্যক্তির নিকট একই মোবাইল নম্বর থেকে টাকা চাওয়া হলে ৪ ব্যক্তি বরিশাল মেট্রোপলিটনের চার থানায় পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করেন। কোতোয়ালী থানায় দায়েরকৃত মামলায় টুকুকে গ্রেফতার করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।