কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাদক উদ্ধার করতে গিয়ে ঘরে আটকা পরে চারজন পুলিশ। পরে পুলিশ তাঁর কালো সরকারি লাঠি ফেলে তিনটি পার্টিশন দরজা ভেঙে আত্মরক্ষা পান। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় পান্টি ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় পান্টি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ সাখাওয়েত হোসেন আহত হন।
এরপর দুপুরে কুমারখালী থানা পুলিশ পুনরায় ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে একটি চাইনিচ কুড়াল, তিনটি খেলনা পিস্তল ও চাকু উদ্ধার করে। এসময় বাড়ির মালিক সাত্তারকে আটক করে পুলিশ।
তবে সাত্তারের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, পুলিশ মাঝেমাঝেই এসে তাদের উত্যক্ত করে। অভিযানের নাম করে বাড়িতে থাকা নগদ টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। সদস্যদের তুলে নিয়ে মাদক মামলায় চালান দেয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে চারজন পুলিশ এসে ঘরে প্রবেশ করে জোরপূর্বক তল্লাশী করে এবং বৈশাখী নামের এক সদস্যের সাথে ধস্তাধস্তি করে। এসময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরা পুলিশদের ঘরে আটকে রাখে। পরে পুলিশ ঘরে থাকা নগদ ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা ও বৈশাখীর গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন নিয়ে তিনটি দরজা ভেঙে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে আব্দুস সাত্তারের বাড়ি পরিচিত। তার চার সন্তান আব্দুর রাজ্জাক, শরিফুল, সাইফুল ও আশরাফুলের নামে মাদক, ডাকাতি, চুরিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। মাদক আছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে সাত্তারের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযারে পরিবারের সদস্যরা বাধা সৃষ্টি করে এবং তাঁদের ঘরে আটক করে রাখে। পরে পুলিশ দরজা ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার সময় পান্টি ক্যাম্পের ইনচার্জকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আহত করে।
পুলিশ আরো জানায়, দুপুরে সাত্তারের বাড়িতে পুনরায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তাঁর বাড়ি থেকে একটি চাইনিচ কুড়াল, তিনটি খেলনা পিস্তল ও চাকু উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও বাড়ির মালিককে আটক করা হয়।
এবিষয়ে সাত্তারের ছোট ছেলে আশরাফুলের স্ত্রী বৈশাখী খাতুন বলেন, সকালে স্বামী সন্তানদের খাবার দিচ্ছি। হঠাৎ পুলিশ এসে ঘরে ঢোকে মাদকের কথা বলে তল্লাশি শুরু করে। বাঁধা দেওয়ায় পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। আর বাড়ির লোকজন দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশরা আমার গলার সোনার চেইন ও ঘরে থাকা ৪৬ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে দরজা ভেঙে পালিয়ে যায়।
বাড়ির মালিক আব্দুস সাত্তার বলেন, মাঝেমাঝেই পুলিশ এসে বিরক্ত করে। তল্লাশির নামে টাকা পয়সা নিয়ে যায়। আজও এসেছিল। আটক করেছিলাম।কিন্তু কালো লাটি ফেলে দরজা ভেঙে পালিয়ে যায়। তবে আঘাত করা হয়নি কাউকে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আকিবুল ইসলাম বলেন, সাত্তারের বাড়ি একটি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পরিবারের সদস্যরা পুলিশের কাজে বাঁধা প্রদান করে এবং পুলিশকে কোপ দিয়ে আহত করে।
তিনি আরও বলেন, দুপুরে পুনরায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয় এবং বাড়ির মালিককে আটক করা হয়। এ সংক্রান্ত কুমারখালী থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।