কুমিল্লাকে গুঁড়িয়ে দিলেন মাশরাফি

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৮ই জানুয়ারী ২০১৯ ০৭:২৯ অপরাহ্ন
কুমিল্লাকে গুঁড়িয়ে দিলেন মাশরাফি

একা এক বোলারই যখন ৪ ওভারে ১ মেডেন নিয়ে মাত্র ১১ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট, তখন প্রতিপক্ষের করার কিছুই থাকে না। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সেরও থাকলো না। রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার বিধ্বংসী এবং আগুনে বোলিংয়ের সামনে উড়ে গেলো কুমিল্লার ব্যাটিং লাইনআপ। ১৬.২ ওভারেই মাত্র ৬৩ রানে অলআউট হয়ে গেলো তামিম ইকবাল, এভিন লুইস, স্টিভেন স্মিথ, শহিদ আফ্রিদি কিংবা শোয়েব মালিকদের নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইনআপ। টি-টোয়েন্টিতে একজন বোলারের জন্য চার ওভারের কোটা। একটানে চারটি ওভারই করে ফেললেন সদ্য সংসদ সদস্য হয়ে আসে রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এমনি এমনি তো আর এক স্পেলে টানা নিজের ওভারগুলো শেষ করে দেননি মাশরাফি! তার এই এক স্পেলেই যে রীতিমত কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৪ ওভার শেষে মাশরাফির বোলিং ফিগার, ৪-১-১১-৪। টি-টোয়েন্টিতে কতটা বিধ্বংসী আর কৃপণ বোলিং! কল্পনা করা যায়? একটি মেডেনও নিলেন। ৪ ওভারে রান দিলেন কেবল ১১টি। ফিরিয়ে দিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের টপ অর্ডারের সেরা চারজন ব্যাটসম্যানকে! টস জিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান মাশরাফি। আমন্ত্রিত হয়ে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দুটি ওভার ঠিকই সামলে নিয়েছিলেন তামিম ইকবাল আর এভিন লুইস। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসেই যেন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মাশরাফি।

দলের তৃতীয় এবং নিজের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলেই ফরহাদ রেজার হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তামিমকে। ১০ বলে ৪ রান করে আউট হয়ে যান কুমিল্লার এই আইকন ক্রিকেটার। নিজের তৃতীয় ওভার করতে এসে দ্বিতীয় বলেই ইমরুল কায়েসকে ফিরিয়ে দেন মাশরাফি। ৪ বলে মাত্র ২ রান করে ফিরে যান ঘরোয়া ক্রিকেটের সফল এই ব্যাটসম্যান। একই ওভারের পঞ্চম বলে এভিন লুইসকেও সাজঘরের পথ দেখালেন মাশরাফি। তিনি ক্যাট তুলে দেন নাজমুল ইসলাম অপুর হাতে। অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ এসে দাঁড়াতেই পারেননি। বল খেলেছিলেন ৫টি। কিন্তু ফরহাদ রেজার হাতে যখন তিনি মাশরাফির বলে ক্যাচ তুলে দিলেন, তখন ৫ বলে কোনো রানই তুলতে পারেননি স্মিথ। স্মিথ আউট হওয়ার আগে অবশ্য শোয়েব মালিকের উইকেট তুলে নেন শফিউল ইসলাম। মাত্র ৩ বল খেলে শফিউলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান শোয়েব মালিক। অর্থ্যাৎ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ১৮ রানে বসিয়ে তিনটি উইকেট তুলে নিলো রংপুর। এরই মধ্যে স্পেল এবং কোটা শেষ করে ফেলেন মাশরাফি।

১০ রানে প্রথম উইকেট, ১৬ রানে দ্বিতীয় এবং ১৮ রানে বসে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম উইকেট হারায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ২৭ রানে ৬ষ্ঠ উইকেটটিও হারিয়ে ফেলে তারা। এবার আউট হন এনামুল হক বিজয়। ফরহাদ রেজার বলে তিনি ক্যাচ দিলেন বেনি হাওয়েলের হাতে। ধুঁকতে থাকা কুমিল্লার হাল ধরার চেষ্টা করেন শহিদ আফ্রিদি। প্রথম ম্যাচের মত এই ম্যাচেও তার ব্যাট কিছুটা কথা বলেছিল। কুমিল্লার ইনিংসে দুই অংকের ঘর ছোঁয়া একমাত্র ব্যাটসম্যানই ছিলেন তিনি। সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন আফ্রিদি। ১৮ বল খেলে ৩টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মারও মারেন তিনি। কুমিল্লার ইনিংসে এই একটি মাত্র ছক্কার মার দেখা গেলো। বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮ রান করেন এভিন লুইস। ৭ রান করেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ৬ রান আসে মেহেদী হাসানের ব্যাটে এবং ৫ রান করেন আবু হায়দার রনি। মাশরাফির সঙ্গে বল হাতে জ্বলে উঠলেন নাজমুল ইসলাম অপুও। ৩.২ ওভার বল করে ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। শফিউল ইসলাম ২ ওভারে ১টি মেডেন এবং ৮ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট এবং ১ উইকেট নেন ফরহাদ রেজা।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব