২০২৩ সালে সেবাখাতে দুর্নীতির শিকার হওয়া খানার সংখ্যা ৭০.৯ শতাংশ পৌঁছেছে, যা একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হিসেবে উঠে এসেছে। দুর্নীতির শীর্ষে রয়েছে পাসপোর্ট, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলি। এসব তথ্য মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে সেবাখাতে দুর্নীতি জাতীয় খানা জরিপ-২০২৩ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
এই জরিপে অন্তর্ভুক্ত ১৫ হাজার ৫১৫টি খানার ওপর গবেষণা চালানো হয়। এসব খানার মধ্যে ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ ঘুষ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ঘুষ ছাড়া সেবা পাওয়া যায় না। জরিপে আরও বলা হয়, গত বছরে ঘুষ হিসেবে ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে (২০০৯ থেকে ২০২৪) ঘুষের প্রাক্কলন ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই জরিপটি সেবাগ্রহণকারীদের অভিজ্ঞতা ভিত্তিক, যা প্রতিদিনের জীবনে ঘুষ ও দুর্নীতির যে প্রভাব পড়ছে, তা তুলে ধরে। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি এবং ঘুষের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ অব্যাহত রয়েছে, যা সাধারণ জনগণের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জরিপ অনুযায়ী, ঘুষের শীর্ষ সেবা খাতগুলো হচ্ছে বিচারিক প্রক্রিয়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, ভূমি সেবা, পাসপোর্ট সেবা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা। এসব খাতে দুর্নীতি জনগণের দৈনন্দিন সেবা পাওয়ার অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে। এছাড়া, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং বিমা খাতে দুর্নীতির অভিযোগও শীর্ষে রয়েছে।
প্রতিবেদনে দুর্নীতি প্রতিরোধে কিছু সুপারিশও রয়েছে, যেমন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা এবং সামাজিক আন্দোলন পরিচালনা। এছাড়া, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ এবং নিয়মিত গণশুনানি আয়োজনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই জরিপে উঠে আসা তথ্যগুলো জনগণের জন্য একটি বড় সতর্কতা সংকেত এবং সেবাখাতে দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।