বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা সংকট। প্রায় এক মাস ধরে অন্যান্য দেশের মতো এ সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই করছে ইউরোপের দেশ জার্মানি। করোনার কারণে কড়াকড়ির পর দেশটিতে সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। ফলে ধীরে ধীরে কিছু বিধিনিয়ম শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। সোমবার থেকে সতর্কতা বজায় রেখে নির্দিষ্ট কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করেছে জার্মানি। এ সিদ্ধান্তের প্রভাব দেখার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে দেশটির সরকার।
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে মানুষের মধ্যে ব্যবধান বজায় রেখেই একাধিক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জার্মানিতে।সংক্রমণের হার কিছুটা কমার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে মনে করছেন দেশটির অনেক রাজনীতিবিদ।
জানা গেছে, প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার দেশজুড়ে ৮০০ বর্গ মিটার আয়তনের চেয়ে ছোট দোকানপাট খোলা হচ্ছে। গাড়ি, সাইকেল ও বইয়ের দোকানের ক্ষেত্রে আয়তন সংক্রান্ত কোনো শর্ত আরোপ করা হচ্ছে না। তবে এসব দোকানে প্রবেশ করতে নির্দিষ্ট কিছু কড়া নিয়ম মেনে চলতে হবে বলে জানা গেছে।
দেশটির ফেডারেল সরকার গোটা দেশের জন্য কিছু সাধারণ সিদ্ধান্ত নিলেও রাজ্য স্তরে পদক্ষেপের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। কিছু রাজ্যের চিড়িয়াখানা খোলা হচ্ছে৷ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় আগে থেকেই উপাসনার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে স্যাক্সনি রাজ্যে। পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির স্বার্থে কয়েকটি রাজ্যে নির্দিষ্ট কিছু ক্লাসে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারবে বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অন্যান্য রাজ্যগুলোতে মে মাস থেকে কিছু ক্লাস খোলা হবে৷ কিন্ডারগার্টেন খোলার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি দেশটি। তবে দেশজুড়ে বিতর্কের পর বিশেষজ্ঞদের এক দল এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু করবে বলে জানা গেছে। ধাপে ধাপে কিন্ডারগার্টেন খোলার পরিকল্পনার ঝুঁকির বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তারা।
করোনা সংকটের মাঝে রাজ্যগুলোর মধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন জার্মানির অর্থনীতি মন্ত্রী পেটার আল্টমায়ার। এক সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, কড়াকড়ি আরো বাড়াতে অথবা শিথিল করতে পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামা ঠিক নয়। এই মুহূর্তে সংযত থাকলে দ্বিতীয় দফার লকডাউন এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তিনি। তাই ফেডারেল ও রাজ্য সরকারের যৌথ পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি বলে জানান তিনি।
জার্মানিতে বিধিনিষেধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন না দেশটির চ্যান্সেলার অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। তার মতে, এই সাফল্য অত্যন্ত ভঙ্গুর৷ নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেট বলেন, একেবারে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে আরো অনেক সময় লাগবে। এমনকি কিছু কড়াকড়ি ২০২১ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, অর্থনীতির অচলাবস্থা কাটাতে এই পদক্ষেপ সফল হলেও সংক্রমণের হার মারাত্মক বেড়ে গেলে জার্মান সরকারকে পিছিয়ে আসতে হতে পারে। সূত্র- ডয়চে ভেলে