
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০১৯, ০:৪৬

ফেনীর আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ১৬ আসামির একজন তার সহপাঠী কামরুন নাহার মণি। গত বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেন। কারাবন্দি মণি গত ২১ সেপ্টেম্বর একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। রায় ঘোষণার সময় দিন এক মাসের সেই কন্যা সন্তানকে নিয়েই তিনি আদালতে আসেন। পরদিন মণির স্বামী রাশেদ খান রাজু তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দেন। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
আমার আমানত, আমার কলিজার টুকরা মেয়েটাকে বাছাতে গিয়ে PBI এর বানানো মিথ্যা জবানবন্দি দিয়ে আজ ফাঁসির আসামি তুমি। তোমার কাছে আমার আমানত এতোই বড় ছিলো যে যাকে তুচ্ছ করে তুমি সত্যের সাথে থাকতে পারোনি। যেদিন রিমান্ডে তোমার পেটে আমার বাচ্ছাটাকে ড্রিল মেশিন দিয়ে ফুটো করে দিবে বলেছিলো সেদিন নিশ্চয়ই ভেবেছো তোমার জীবনের চেয়েও তোমার বাচ্ছার জীবন অনেক মূল্যবান।

তুমি যে ঘটনার পরে ৩টাসহ মোট ৬টা পরীক্ষা দিয়েছো আর ঘটনার দিনের পরীক্ষাসহ সবগুলাতেই A+ পেয়েছ সেই খবর কেউ রেখেছে? তুমি খুন করে কিভাবে স্বাভাবিক ছিলা বা ঘটনার দিন ও তার পরের ৩টা পরীক্ষাসহ মোট ৬টাতেই A+ পেতে পারো সেটা কি কেউ চিন্তা করেছে?
কেউ কি জানে যে অন্য আরো একটি মণি ছিলো যে কিনা সিরাজের পক্ষ নিয়ে নুসরাতের বিরুদ্ধে ভিডিও বার্তা দিয়েছিলো। তাকে যে PBI গ্রেপ্তার করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে তা কি দেশের কেউ জানে? অবশেষে বলবো আমার কলিজার সন্তান একদিন এই দেশে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, এই অন্যায়ের প্রতিবাদ তাকেই করতে হবে। তোমার মৃত মুক্তিযোদ্ধা বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো জিজ্ঞেস করতে দেশ কি এই জন্য স্বাধীন করেছিলে কিনা যেখানে তোমরাই আজ পরাধীন।
আজ জাতির কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম এই মা মেয়ে যদি নির্দোষ হয় আপনাদের কি আল্লাহ এর আদালতে জবাবদিহি করতে হবে না? আবার বলছি, বুক ফুলিয়ে বলছি মণি ১০০ ভাগ নির্দোষ। আমি আমার ভালোবাসাকে অন্যায়ের কাছে হেরে যেতে দিবো না। লড়বো এই অন্যায়ের বিরুদ্ধেই, আমি লড়বো ইনশাআল্লাহ। মুবাশশিরা খানম "রাথী" এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে দেশের ইতিহাসে। দেশের আর কোন নারী যেন এমন বর্বরতা আর নিষ্ঠুরতার শিকার না হয় সেটাই কামনা করি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব