সংবাদ প্রকাশের পর: বিতর্কিত ডিডি মিজান মৌলভীবাজার থেকে বদলী

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহসান বিন মুজাহির জেলা প্রতিনিধি , মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২১শে নভেম্বর ২০২৪ ০৯:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ প্রকাশের পর: বিতর্কিত ডিডি মিজান মৌলভীবাজার থেকে বদলী

মৌলভীবাজার থেকে বিতর্কিত উপপরিচালক (ডিডি) মিজানুর রহমান শরীফকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরায় বদলি করেছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) এই বদলির আদেশ জারি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে বিকেলে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


মিজানুর রহমান শরীফের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারে দায়িত্ব পালনের সময় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তিনি সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, লাইসেন্সধারী মদের ব্যবসায়ীদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করা, এবং চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে হয়রানি করার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।


লাইসেন্সধারী ২৩ জন পাট্টা ব্যবসায়ী তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে। অভিযোগে বলা হয়, ডিডি মিজান ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি মাসে ২০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করতেন।


এছাড়াও ২৯ মে কুলাউড়ার লংলা চা বাগানের দেশীয় মদের দোকান পরিদর্শনকালে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন মিজানুর রহমান শরীফ। এই ঘটনার পর স্থানীয় বাগানবাসীরা তাকে ও তার সহকর্মীদের প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।


এই অভিযোগগুলো নিয়ে অধিদপ্তর তদন্ত শুরু করে। ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব তাহনিয়া রহমান চৌধুরীর উপস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এই শুনানির ফলাফল হিসেবে তার বদলি করা হয় সাতক্ষীরায়।


মৌলভীবাজারে দায়িত্ব পালনকালীন তার এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ফলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও দায়ের করা হয়।


জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বলেছেন, "এ ধরনের অনিয়মে জড়িত কোনো কর্মকর্তাকে মেনে নেওয়া হবে না। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, বিভাগীয় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মিজানুর রহমান শরীফের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং এই বদলির ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, প্রশাসনের অভ্যন্তরে দুর্নীতি নির্মূলে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।