বরিশাল বিভাগে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় নতুন করে ২০৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে বিভাগে আক্রান্ত হয়েছে ৯৮৩ জন। আর বিভাগে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭ হাজার ৬০০ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৭ জনের এবং পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সর্বশেষ মৃত্যু নিয়ে গত এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা ৪০জন। আর বরিশাল বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩০৫ জনে গিয়ে দাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ বাসুদেব কুমার দাস জানান, এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ১৭ হাজার ৬০০ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ২৭ জন।
গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ জুন আক্রান্ত ২০৮ আর মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের, ২৮ জুন শনাক্ত ১৯৩, উপসর্গসহ মৃত্যু ৭, ২৭ জুন শনাক্ত ১৮১, উপসর্গসহ মৃত্যু ৭, ২৬জুন শনাক্ত ১৫০, মৃত্যু ৮, ২৫ জুন শনাক্ত ৭৪, মৃত্যু ৩, ২৪ জুন শনাক্ত ৫৫, মৃত্যু ১, ২৩ জনু ১২২, উপসর্গসহ মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।
আক্রান্ত সংখ্যায় বরিশাল জেলায় নতুন শনাক্ত ৮৫ জন নিয়ে মোট ৭ হাজার ৭৯৩ জন, পটুয়াখালী জেলায় নতুন ৯ জন নিয়ে মোট ২৪৬৫ জন, ভোলা জেলায় নতুন ৫ জন সহ মোট ২০৫২ জন, পিরোজপুর জেলায় নতুন ৫৩ জন নিয়ে মোট ২১৯৫ জন, বরগুনা জেলায় নতুন ৩ জন নিয়ে মোট আক্রান্ত ১৪১৩ জন এবং ঝালকাঠি জেলায় নতুন ৫৩ জন শনাক্ত হওয়ায় মোট সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৬৮২ জন।
এদিকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানাগেছে, গত ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসাপাতালের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৭ জনের এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যা নিয়ে শুধুমাত্র শেবাচিম হাসপাতালেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০৬ জন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে ৫২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা ৫২৭ জনের মধ্যে ৩১ জনের কোভিড টেষ্টের রিপোর্ট এখনো হাতে পাওয়া যায়নি।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিচালকের তথ্য সংরক্ষক জাকারিয়া খান স্বপন জানিয়েছেন, বিগত ২৪ ঘন্টায় (বুধবার) সকাল পর্যন্ত শেবাচিমের করোনার আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৮ জন ও করোনা ওয়ার্ডে ৫ জন ভর্তি হয়েছেন।
উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে ভর্তি সাতজন মৃত্যুবরণ করেন। করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে এখন ১৪২ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। যাদের মধ্যে ৩৩ জনের করোনা পজেটিভ এবং ১০৯ জন আইসোলেশনে রয়েছে।
আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৯০ জন করোনা পরীক্ষা করান। যারমধ্যে ৪৫.২৬ শতাংশ পজেটিভ শনাক্তের হার।
প্রসঙ্গত, বরিশাল বিভাগে সর্বপ্রথম ২০২০ সালের ৯ মার্চ পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। তবে শনাক্ত ও মৃত্যুর হাড়ে সবার শীর্ষে রয়েছে বরিশাল জেলা।
এদিকে দেশব্যাপী দিন দিন করোনা সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় ১ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। আর তা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি ও প্রচারণা শেষ করেছে বরিশাল জেলা ও পুলিশ প্রশাসন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার বলেছেন, করোনা প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধির নির্দেশনা কেউ অগ্রাহ্য করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীমউদ্দিন হায়দার বলেছেন, সরকারের যে কোন পদক্ষেপ দেশ ও দশের কল্যাণের জন্য। করোনার সংক্রমন প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে নিয়মিত প্রচারণা চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য কোন ধরণের ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।