সংবাদ প্রকাশে টনক নড়লো শেবাচিম কর্তৃপক্ষের, বাড়ছে শয্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৫ই এপ্রিল ২০২১ ০১:৪৩ অপরাহ্ন
সংবাদ প্রকাশে টনক নড়লো শেবাচিম কর্তৃপক্ষের, বাড়ছে শয্যা

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল দক্ষিণাঞ্চলের করোনা ডেটিকেটেড একমাত্র হাসপাতাল। কিছুদিন পূর্বেও এ হাসপাতালের করোনা ইউনিট রোগী শূণ্য থাকলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে


আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় করোনায় আক্রান্ত কিংবা উপসর্গ দেখা দেওয়া রোগীর চাপও দিন দিন বাড়ছে। ফলে আইসিইউ শয্যা ও সাধারণ শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


এদিকে করোনা ইউনিটের নোংরা পরিবেশ, অব্যবস্থাপনা থাকায় রোগী ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। এনিয়ে একাধিক প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে গণমাধ্যমের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহীন।


যার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার চিত্র ধারণ করতে গিয়ে ৪ সাংবাদিক লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ সময় তাদের ক্যামেরা আটকে রাখা হয়। যদিও বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।


বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় এ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৬ জন রোগী ভর্তি হলেও করোনা ওয়ার্ডে কেউ ভর্তি হয়নি। তবে করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে মোট ২৪ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।


বর্তমানে এ দু’টি ওয়ার্ডে রোগী রয়েছেন ১৪৬ জন। যার মধ্যে করোনা ওয়ার্ডে ২৯ জন রোগী চিকিৎসাধীন। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৬ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।


জানা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে হাসপাতালটিতে সব থেকে বেশি প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে অক্সিজেন ও আইসিইউ সেবার। সেন্ট্রালের পাশাপাশি সিলিন্ডারের মাধ্যমে রোগীদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ সম্ভব হলেও করোনা ওয়ার্ডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মাত্র ১২টি বেড দিয়ে যথাযথ সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের।


এছাড়া প্রয়োজনীয় জনবলেরও সংকট থাকায় ভোগান্তির প্রভাবটা রোগীদের ওপর গিয়েই পড়ছে। তবে এসব অবস্থা থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালাচ্ছে হাসপাতাল প্রশাসন।  


জানা গেছে, করোনার প্রকোপ দেখা দিলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ হাসপাতালের পূর্ব দিকের নতুন পাচতলা ভবনটিতে অনেকটাই তরিঘরি করে করোনা ইউনিট চালু করা হয়। প্রথম দিকে ২০ শয্যা দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে দেড়শ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু এখন দেড়শ-এর অধিক রোগী গড়ে প্রতিদিন করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ড মিলিয়ে থাকছে সেখানে।


আর তাই করোনা ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেখানে ৫০টি সাধারণ শয্যার পাশাপাশি ১০টি আইসিইউ বেড বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। যার ধারাবাহিকতায় এরই মধ্যে ১০টি আইসিইউ শয্যা পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।


হাসপাতালের নবাগত পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে প্রতিদিনই রোগীর ভিড় বাড়ছে। পাশাপাশি করোনা ওয়ার্ডের আইসিইউ শয্যার সংখ্যা মাত্র ১২টি। সবগুলো শয্যা রোগীতে পরিপূর্ণ। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ শয্যা ও সাধারণ শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। আশাকরি দ্রুত এগুলো সংযোজন করা সম্ভব হবে।


স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস জানান, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ছয় জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিশেষ শয্যার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।