হাকিমপুরে বোরো ধান চাষে কৃষকরা অতিরিক্ত খরচের মুখে

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, নিজস্ব প্রতিনিধি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: রবিবার ২রা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৭:৫৭ অপরাহ্ন
হাকিমপুরে বোরো ধান চাষে কৃষকরা অতিরিক্ত খরচের মুখে

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় বোরো ধান চাষের জন্য মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মাঘ মাসের শেষের দিকে হঠাৎ করে কুয়াশায় ঢাকা পড়লেও, কৃষকরা মাঠে নেমে জমি তৈরি এবং চারা রোপণ শুরু করেছেন। তবে এ বছর বিদ্যুৎ, সার, কীটনাশক, ডিজেল এবং শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। 


উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭ হাজার ৬শত ২৩ হেক্টর জমি। তবে অতিরিক্ত খরচ কৃষকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যুৎ খরচের কারণে সেচের খরচ বাড়ছে এবং সার, কীটনাশকসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বৃদ্ধির ফলে খরচের পরিমাণ বেশ বেড়েছে। 


হাকিমপুর উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের কোকতাড়া গ্রামের গভীর নলকূপের মালিক মো. আলম হোসেন জানান, গত বছর তার নলকূপের মাধ্যমে সেচের খরচ ছিল ৩৬০০-৩৮০০ টাকা, কিন্তু এবারে সেটি বেড়ে ৪২০০ টাকা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, "বিদ্যুৎ খরচ বেশি, তাছাড়া সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়ে খরচ বেড়েছে, তবে কৃষকরা এভাবে চলতে বাধ্য।" 


এছাড়া, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের চারা রোপণে পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা একযোগে কাজ করছে। স্থানীয় কৃষক আজিনুর রহমান বলেন, "এবার পানি সেচ, জমি চাষ করা, সার এবং কীটনাশকের খরচ বেশি হচ্ছে। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের মতো ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।" 


উপজেলার কোকতাড়া গ্রামের বর্গাচাষি শ্রী গোপাল রবিদাস জানান, তিনি নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন। তিনি বলেন, "বাজারে সারের দাম বেড়েছে, কাজের মজুরি বেশি, তবে আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে এবং ধানের দাম ভালো পেলে খরচ পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।" 


উপজেলার কৃষকরা বর্তমানে সরকারি প্রণোদনার আওতায় হাইব্রিড ধানের বীজ এবং সার পাচ্ছেন, যা তাদের জন্য কিছুটা উপকারি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, ১০০০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করা হয়েছে এবং ২০০০ জনকে সার সরবরাহ করা হয়েছে। 


কৃষকরা বলছেন, যদি আবহাওয়া ভালো থাকে এবং ধানের দাম ভালো পাওয়া যায়, তবে তারা অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে পারবেন। তবে এ বছর খরচ অনেক বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা উদ্বিগ্ন। 


এদিকে, হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিস আশাবাদী যে, বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা সফলভাবে অর্জিত হবে এবং কৃষকদের লাভজনক ফলন হবে।