বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে পরমাণু শক্তি সহযোগিতা আরও গভীর করতে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু শক্তি করপোরেশন রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রূপপুর প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদারে রাশিয়ার অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি প্রকল্পটি সময়মতো সম্পন্ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং রসাটমের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। রূপপুর প্রকল্প বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, নির্মাণকাজ পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে চলছে এবং ইতোমধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। লিখাচেভ আরও জানান, প্রকল্পটির পরীক্ষামূলক চালনা চলছে এবং শিগগিরই পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হবে। তিনি আশ্বস্ত করেন যে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে প্রকল্পটি সফলভাবে সম্পন্ন করা হবে।
বৈঠকে দুই পক্ষ আন্তঃসরকারি ঋণ চুক্তি (আইজিসিএ) সংশোধনের বিষয়েও আলোচনা করেন। এতে ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। উভয় পক্ষ শিগগিরই আইজিসিএ-এর প্রটোকল নম্বর ২ স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়। এছাড়া কর্মী প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা প্রটোকল এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরসহ দীর্ঘমেয়াদি সফলতার জন্য অব্যাহত সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী। রাশিয়ার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার খোজিন, রাশিয়ার ফেডারেল এনভায়রনমেন্টাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড নিউক্লিয়ার সুপারভিশন সার্ভিস-এর ডেপুটি চেয়ারম্যান আলেক্সি ফেরোপোন্তভ, রসাটমের প্রথম ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল আন্দ্রেই পেত্রভ এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক আলেক্সি ডেরি।
মহাপরিচালক লিখাচেভ বর্তমানে এক দিনের সফরে বাংলাদেশে রয়েছেন। এর আগে তিনি ২০২৪ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ সফর করেন। রূপপুর প্রকল্প বাংলাদেশ-রাশিয়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ এবং এটি দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।