সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সলঙ্গা বাজারের পাদুকা ব্যবসায়ীরা নামাজের সময় জুতা বিক্রি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীরা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের এই উদ্যোগ ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধা ও অঙ্গীকারের প্রতিফলন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
সলঙ্গা বাজারের পাদুকা সমবায় সমিতির ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নামাজের আযান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা জুতা বিক্রি বন্ধ করে নামাজে চলে যান। দোকানের পর্দা টানিয়ে বা সাইনবোর্ডে লেখা থাকে "এখন নামাজের বিরতি।" সরেজমিনে দেখা গেছে, এই উদ্যোগ সাধারণ ক্রেতাদের মাঝেও ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে।
নামাজের সময় দোকান বন্ধ দেখে অনেক ক্রেতাই ব্যবসায়ীদের প্রশংসা করেছেন। জুতা কিনতে আসা হুমায়ুন কবির রানা ও ইসরাত জাহান সীমা জানান, তারা দোকান বন্ধ দেখে প্রথমে অবাক হলেও পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে খুবই খুশি হয়েছেন। এমন উদ্যোগ বর্তমান সময়ে একটি দৃষ্টান্ত।
সলঙ্গা বাজার পাদুকা সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল করিম এবং সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নামাজের জন্য দোকান বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্ত ধর্মীয় দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তারা অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও এমন উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
ইক্বরা ইসলামি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুর রহমান সাইফ এই উদ্যোগকে ইসলামের ফরয বিধানের একটি চমৎকার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগ অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে এবং নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াবে।
ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম ও আলাউদ্দিন জানান, নামাজের জন্য সাময়িক সময়ের জন্য দোকান বন্ধ রাখা কোনো ক্ষতির কারণ নয়, বরং এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি পথ। তারা অন্যান্য মুসলিম ব্যবসায়ীদেরও অনুরোধ করেছেন নামাজের সময় দোকান বন্ধ রেখে জামায়াতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই উদ্যোগ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই এই উদ্যোগকে বর্তমান সময়ে ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করছেন।
সলঙ্গা বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও এই উদ্যোগের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এটি শুধু একটি ধর্মীয় দায়িত্ব পালন নয়, বরং একটি সামাজিক দৃষ্টান্ত, যা অন্য বাজারের ব্যবসায়ীদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।