গোপালগঞ্জে খেজুরের রস খেয়ে ফেরার পথে হয়ে গেলেন লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৭ই জানুয়ারী ২০২৫ ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
গোপালগঞ্জে খেজুরের রস খেয়ে ফেরার পথে হয়ে গেলেন লাশ

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থেকে খেজুরের রস পান করতে কালিনগর যাওয়ার পথে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের হিরণ্যকান্দি এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তিন বন্ধু নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকালে সাম্পান হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুইজন প্রাণ হারান। গুরুতর আহত অবস্থায় তৃতীয়জনকে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  


নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পরিবার। তারা হলেন, পোনা কাদিরপাড়া গ্রামের বিশাল নাগ (১৬) ও দীপু দাস (১৫) এবং পিংগলিয়া গ্রামের হৃদয় মৃধা (১৮)। তারা সবাই বন্ধু ছিলেন এবং শখের বসে ভোরে খেজুর রস খেতে কালিনগর যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটে।  


এ ঘটনায় পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে রাস্তার দৃশ্যমানতা কম থাকায় মোটরসাইকেলটি বিপরীত দিক থেকে আসা একটি গাড়ির ধাক্কায় পড়ে। দুর্ঘটনার পর গাড়িটি দ্রুত পালিয়ে যায়।  


ফরিদপুরের ভাংগা হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. রকিবুজ্জামান জানান, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের হিরণ্যকান্দি এলাকায় কুয়াশার কারণে রাস্তা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল না। এ কারণে অজ্ঞাত গাড়ি মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে তিনজন প্রাণ হারান। তিনি বলেন, গাড়িটি চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।  


দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে। তবে তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এই দুর্ঘটনা এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সাধারণ মানুষ এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে রাস্তার নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।  


পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহতরা সবাই খুবই প্রিয় এবং জীবনের সবে শুরুতে এমন পরিণতি পরিবার মেনে নিতে পারছে না। বন্ধুদের এই মর্মান্তিক পরিণতি এলাকাবাসীর মনেও গভীর শোকের সৃষ্টি করেছে।  


এদিকে, রাস্তার দৃশ্যমানতা কম থাকা অবস্থায় গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকার জন্য গাড়িচালকদের প্রতি সতর্কতার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, শীতকালে ঘন কুয়াশার সময় মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে চালকদের আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।  


স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করছে এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মহাসড়কে গাড়ি চলাচলে আরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।