করোনা মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে টালমাটাল বিশ্বের অর্থনীতি। মূল্যস্ফীতি আর বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি সংকটকে আরও তীব্র করছে।
বিশ্বজুড়ে বাড়ছে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির দাম। বাড়তি দামে এসব প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র বিভিন্ন দেশকে। টান পড়ছে রিজার্ভে।
এরিমধ্যে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানেও কমছে রিজার্ভ। সেই সঙ্গে দেশটিতে পাল্লা দিয়ে গুরুতর হয়ে উঠছে অর্থনৈতিক সংকট।
এই পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে রুপি ও টাকা ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)।
দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি গেলো ২৪ আগস্ট তাদের বিভিন্ন শাখাকে একটি চিঠি পাঠিয়ে এই ব্যাপারে মতামত চাওয়ার পাশাপাশি একটি নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। চিঠির বিষয়ে এসবিআই -এর পক্ষ থেকে এখনও কিছু বলা হয়নি।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চিঠির বিষয়ে জানতে চেয়ে তাদের পাঠানো মেইলের কোন উত্তর এখন পর্যন্ত দেয়নি স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। এই চিঠির বিষয়টি এর আগে অন্য কোথায় প্রকাশিত হয়নি বলেও দাবি করেছে রয়টার্স।
সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের অভ্যন্তরীণ রিজার্ভ চাপের মুখে আছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে দুই দেশের মুদ্রা রুপি ও টাকা ব্যবহার করা যায় কিনা— সেটি বিবেচনা করা যেতে পারে।
এই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, উচ্চ আমদানি বিল ও ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও দুর্বল হয়ে পরার কারণে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের ডলারের মজুত যাতে আরও কমে না যায়, সেই কারণেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে রুপি ও টাকা ব্যবহার করা হবে কি না- সে সম্পর্কে এখনও সরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
তবে গেল সপ্তাহে ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, স্থানীয় মুদ্রা রুপি ও টাকায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে কোনো সমস্যা নেই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকও চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে দেশটির মুদ্রা ইউয়ান ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, আমদানি সংক্রান্ত ব্যয় বেড়ে যাবার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত এখন নেমে এসেছে ৩৮ বিলিয়ন ডলারে। গত বছরও বাংলাদেশের রিজার্ভে ছিলো ৪৮ বিলিয়ন ডলার।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।