প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:১০
সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, র্যাব-এর মহাপরিচালক থাকার সময় তিনি ব্যারিস্টার আরমানকে টিএফআই সেল থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে চেষ্টা সত্ত্বেও সফল হতে পারেননি বলে দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্টেট ডিফেন্সের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। মামুন বলেন, ব্যারিস্টার আরমানের বন্দিত্বের বিষয়টি তিনি জানতেন এবং মুক্তির জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব হয়নি।
এর আগে রাজসাক্ষীর জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, ব্যারিস্টার আরমানকে গুম করে টিএফআই সেলে আটকে রাখা হয়েছিল। মামুনও তা স্বীকার করেন এবং জানান, দায়িত্ব নেওয়ার সময় তার পূর্ববর্তী র্যাব প্রধান বেনজির আহমেদ তাকে বিষয়টি অবহিত করেছিলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, কাউকে গুম বা তুলে আনার মতো কর্মকাণ্ড সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকির নির্দেশে পরিচালিত হতো। এসব কর্মকাণ্ডে অনেক সময় পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অজ্ঞাত রাখা হতো।
তার ভাষায়, কাউকে আটক বা গুমের নির্দেশনা অনেক সময় সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসতো। তবে তার সময়ে এ ধরনের কোনো লিখিত বা সরাসরি নির্দেশ তিনি পাননি। কিছু নির্দেশনা আসতো নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকির পক্ষ থেকেও।
সাবেক আইজিপি মামুন আরও বলেন, র্যাব পুলিশের অধীনে থাকলেও বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে চেইন অব কমান্ড মানা হতো না। র্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে কাজ করতেন, যা পুলিশের আইজিপির কাছে অজানা থাকত।
তিনি জানান, র্যাব মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন আইজিপিকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অবহিত রাখতে। তবে টিএফআই সেলে কে আটক আছে, কতজন আছে—এসব বিষয়ে নিয়মিতভাবে তাকে জানানো হতো না।
চৌধুরী মামুনের দাবি, ব্যারিস্টার আরমানকে তার দায়িত্বকালে আটক করা হয়নি; বরং অনেক আগে থেকেই তিনি টিএফআই সেলে বন্দি ছিলেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলেও তাকে মুক্ত করার উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।