প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১৩
যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস সম্প্রতি এক ঘোষণায় জানিয়েছে, ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা ও সিনিয়র ফরেন সার্ভিস সদস্য ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনকে বাংলাদেশে নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। দীর্ঘ কূটনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই কর্মকর্তা এর আগে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কাজ করেছেন এবং তাঁর এই মনোনয়ন এখন সিনেট অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
একই ঘোষণায় আরও কয়েকজন নতুন মনোনীত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন বর্তমান স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস, যিনি জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। পাশাপাশি সের্গেই গোরকে ভারতের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই সাম্প্রতিক কূটনৈতিক পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনের সঙ্গে বাংলাদেশের পরিচয় নতুন নয়। তিনি ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সে সময়ে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন।
কর্মজীবনের শুরু থেকেই তিনি বাংলাদেশ-সম্পর্কিত কাজে যুক্ত ছিলেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের পাকিস্তান ও বাংলাদেশ বিষয়ক কার্যালয়ে তিনি বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যদিও বর্তমানে এ নামে কোনো অফিস নেই, তবে সেই অভিজ্ঞতা তাঁর কূটনৈতিক জীবনের ভিত্তি গড়ে দেয়।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতায় তিনি সমৃদ্ধ হয়েছেন। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অব পলিটিক্যাল-মিলিটারি অ্যাফেয়ার্সের আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অস্ত্র স্থানান্তর কার্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর ছিলেন। এর আগে ২০১৫-২০১৬ সালে তিনি হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির এশিয়া ও প্যাসিফিক বিষয়ক উপ-কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মীদের একজন পিয়ারসন ফেলো হিসেবে কাজ করেন।
তাঁর কূটনৈতিক জীবনে আরও রয়েছে উত্তর কোরিয়া নীতি বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধির বিশেষ সহকারী হওয়া এবং ইস্ট এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর সাইবার কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করা। এছাড়া ম্যানিলা, সান সালভাদর, রিয়াদ ও হো চি মিন সিটিতে মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলেটে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে পিটার হাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে এ পদ শূন্য রয়েছে। এরপর থেকে একাধিক চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বর্তমানে ঢাকায় চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হিসেবে লিসা জ্যাকবসন কাজ করছেন। তিনি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। ক্রিস্টেনসেনের দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নতুনভাবে গতি পাবে বলে কূটনৈতিক মহলে আশা করা হচ্ছে।