প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ২১:২০
সরকারি অফিসে শৃঙ্খলা আনতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি জারি করা এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, বিকেল ৫টার আগে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী দপ্তর ত্যাগ করতে পারবেন না, এমনকি দাপ্তরিক বা জরুরি প্রয়োজনে অফিসের বাইরে যেতে হলেও সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগ প্রধানের পূর্বানুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। অফিস ত্যাগের আগে নির্ধারিত রেজিস্ট্রারে নাম এন্ট্রি করাও আবশ্যিক করা হয়েছে।
২৩ জুন আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা-৫ থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়, যেখানে সরকারি কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিতি) বিধিমালা, ২০১৯-এর ধারাগুলোর কঠোর প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। এতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে, বিনা অনুমতিতে অফিস ত্যাগ বা অনুপস্থিতি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এখন থেকে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সকাল ৯টার মধ্যে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকতে হবে। অফিসে দেরিতে আসা বা আগেভাগে বেরিয়ে যাওয়া শুধু অনিয়ম নয়, বরং এর জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এমনকি কর্মদিবসে একাধিকবার দেরি করলে ৭ দিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কর্তনের বিধান রাখা হয়েছে।
বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, অফিসে দেরিতে গেলে কর্মচারীর বেতন কাটা বা ক্যাজুয়াল ছুটি থেকে কর্তন করা হতে পারে। যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কেউ যদি সময়মতো না আসেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অফিসে সঠিক সময়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে মনিটরিং জোরদার করার নির্দেশনাও রয়েছে।
নতুন এই আদেশের ফলে অনেক কর্মচারীকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। কারণ, অনুমতি ছাড়া অফিসের বাইরে যাওয়া বা নির্ধারিত সময়ের আগে বেরিয়ে যাওয়া আর আগের মতো সহজ হবে না। শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এই ধরনের পদক্ষেপকে অনেকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
অন্যদিকে, কিছু কর্মকর্তা মনে করছেন, বাস্তব ক্ষেত্রে কিছু নমনীয়তা থাকা দরকার ছিল, বিশেষ করে যেসব বিভাগে ময়দানি কাজ বেশি থাকে। তবে মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারি অফিসের শৃঙ্খলা রক্ষাই এই বিধিমালার মূল উদ্দেশ্য। কর্মক্ষেত্রে উপস্থিতি ও দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার এই উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে সরকারি প্রশাসনের কর্মদক্ষতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।