ফ্যাসিবাদ ও শান্তির প্রতীক পুড়ে ছাই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষ উপলক্ষে তৈরি হওয়া দুইটি প্রতীকী মোটিফে আগুন লেগে যাওয়ায় বর্ষবরণের প্রস্তুতিতে ছন্দপতন ঘটেছে। শনিবার ভোররাতে ঘটে যাওয়া এই অগ্নিকাণ্ডে 'ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি' নামের একটি দানবীয় মোটিফ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে এবং 'শান্তির পায়রা' মোটিফটি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চারুকলা অনুষদের প্রাঙ্গণে যেখানে বর্ষবরণ শোভাযাত্রার জন্য প্রতীকী মোটিফ নির্মাণের কাজ চলছিল, সেখানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আগুনে পোড়া অংশ ও ছাই হয়ে যাওয়া কাঠামো। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কিছু জানা না গেলেও দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ এটিকে দুঃখজনক ঘটনা হিসেবে দেখছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, ভোররাত চারটা ৪৫ থেকে পাঁচটার মধ্যে আগুন লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, সেই সময়ে দায়িত্বরত মোবাইল টিম ফজরের নামাজ আদায়ে গিয়েছিলেন। তাদের অনুপস্থিতির সুযোগে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এই আগুন লাগাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, আগুনের ঘটনাটি আমরা দুঃখজনকভাবে নিয়েছি। ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতীকী চিত্র ও শান্তির পায়রা দুটি আমাদের এবারের শোভাযাত্রার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। এখন আমরা দ্রুত নতুন করে সেগুলো তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছি, যাতে পহেলা বৈশাখের মূল অনুষ্ঠানে কোনো প্রভাব না পড়ে।

চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা সারা রাত পরিশ্রম করে এসব মোটিফ তৈরি করছিলেন। এই আগুন তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিলেও, তারা থেমে থাকবেন না। যেভাবেই হোক, শোভাযাত্রার জন্য নতুন করে কাজ শুরু করবেন বলে জানান তারা।

এ ঘটনায় শোভাযাত্রার ভাবমূর্তি নষ্টের আশঙ্কা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে একই সঙ্গে তারা এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছেন এবং পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

নববর্ষের প্রাক্কালে এমন একটি দুঃখজনক ঘটনার পেছনে যদি কোনো ষড়যন্ত্র থাকে, তাহলে তার রহস্য উন্মোচনে প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ছাত্র-শিক্ষক এবং সংস্কৃতিপ্রেমীদের মাঝে এই ঘটনায় ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও, উৎসবের উচ্ছ্বাসে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা।