ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে প্রসব বেদনা ওঠার পর রেলওয়ে পুলিশের সহায়তায় ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন রুমা আক্তার নামের এক নারী। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ঢাকা জেলা রেলওয়ে পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ট্রেনে আসার সময় হঠাৎ প্রসব ব্যথা অনুভব করেন রুমা। বিমানবন্দর স্টেশনে নেমেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিষয়টি জানার পর দায়িত্বরত রেলওয়ে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। প্ল্যাটফর্মের একটি জায়গা ত্রিপল দিয়ে ঘিরে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা হয় এবং সেখানেই তিনি সন্তান প্রসব করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রুমা স্টেশনে নামার পর ব্যথায় ছটফট করছিলেন। আশপাশের যাত্রীরা পুলিশকে খবর দিলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উপস্থিত নারীদের সহায়তায় সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করা হয়। নবজাতক জন্মের পর আশপাশের যাত্রী ও স্থানীয়রা আনন্দ প্রকাশ করেন। ঘটনাস্থলে থাকা রেলওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি যত দ্রুত সম্ভব তাকে সহায়তা করতে। মা ও সন্তান সুস্থ থাকায় আমরা খুশি।’
রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রসবের পর মা ও নবজাতককে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় এবং তাদের রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলে চিকিৎসকরা জানান, মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ঘটনার পর রেলওয়ে পুলিশের এ সহায়তা দেখে যাত্রীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকে তাদের দ্রুত পদক্ষেপ ও মানবিক আচরণের প্রশংসা করেন। এক যাত্রী বলেন, ‘সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে অনেকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন না, কিন্তু পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছেন, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।’
এদিকে রুমা আক্তারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত হাসপাতালে আসার জন্য রওনা হয়েছেন। রুমার স্বামী জানিয়েছেন, স্ত্রী ও সন্তানের সুস্থতার খবর পেয়ে তিনি স্বস্তি অনুভব করছেন এবং পুলিশ ও স্থানীয়দের প্রতি কৃতজ্ঞ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ধরনের জরুরি অবস্থায় যাত্রীদের সহায়তা করা আমাদের দায়িত্বের অংশ। ভবিষ্যতেও আমরা মানুষের পাশে থাকতে চাই।’ তিনি আরও জানান, স্টেশন ও ট্রেনের নিরাপত্তার পাশাপাশি যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সহায়তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সবসময় প্রস্তুত থাকে।
মা ও নবজাতকের সুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় ও অনলাইন মাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রেলওয়ে পুলিশের প্রশংসা করে পোস্ট দেন। ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করল যে, সঠিক সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত ও মানবিক সহায়তা অনেক বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।