যেখানে-সেখানে যাত্রী তোলার দাবিতে সায়েদাবাদে অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
উত্তম গোলদার
প্রকাশিত: সোমবার ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৪৭ অপরাহ্ন
যেখানে-সেখানে যাত্রী তোলার দাবিতে সায়েদাবাদে অবরোধ

রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় বাসশ্রমিকদের বিক্ষোভে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টার পর শ্রমিকরা সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামার অনুমতি এবং ই-টিকিটিং পদ্ধতি বাতিলসহ কয়েক দফা দাবি তুলে ধরেন। এতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে।  


সকালে সায়েদাবাদ এলাকার জনপদের মোড়ে শ্রমিকরা জড়ো হতে শুরু করেন। পরে শতাধিক শ্রমিক একত্রিত হয়ে সড়ক অবরোধ করেন, ফলে সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা বলেন, ই-টিকিটিং চালুর ফলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং যাত্রী কমে গেছে। তাই পূর্বের নিয়মে যেখানে-সেখানে যাত্রী তুলতে দিতে হবে।  


৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা মহানগরীতে ই-টিকিটিং ও কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস চালু করা হয়। প্রথম পর্যায়ে গাজীপুর-ঢাকা রুটে ২১টি কোম্পানির ২ হাজার ৬১০টি বাস চালু করা হয়। সব বাসের রং গোলাপি নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন ব্যবস্থার কারণে বাস মালিকরা ভাড়া নিয়ে স্বচ্ছতা আনার উদ্যোগ নিলেও শ্রমিকদের দাবি, এতে তাদের আয় কমে গেছে।  


উত্তরার আজমপুরে প্রথম ই-টিকিটিং পদ্ধতি চালু করা হয়। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির উদ্যোগে এ সেবা চালুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা ভঙ্গুর ও বিশৃঙ্খল, যা পরিবর্তনের জন্য নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।  


তিনি আরও বলেন, ‘একটি বাস আরেকটি বাসকে গরু-মহিষের মতো ধাক্কা মারে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ নিয়ে উপহাস করা হয়। এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’ কিন্তু বাসশ্রমিকদের মতে, ই-টিকিটিং ব্যবস্থা শ্রমিকদের আয় কমিয়ে দিয়েছে এবং তাদের স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।  


বিক্ষোভকারীরা দ্রুত এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। এ সময় সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী সড়কে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে। সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। বিশেষ করে অফিসগামী ও শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েন।  


পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করলেও তারা অনড় থাকেন। শ্রমিকরা জানান, ই-টিকিটিং বাতিলের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ফলে বিকেল নাগাদ যানজট আরও বাড়ে এবং বিকল্প পথে যানবাহন চালাতে বাধ্য হয় পরিবহন কর্তৃপক্ষ।  


সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাস মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন ও প্রশাসনের মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান খোঁজা হবে। তবে আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হলে রাজধানীর যানবাহন চলাচলে বড় সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।