তিতাস গ্যাসের ৫ কর্মী মিরপুরে ঘুষের অভিযোগে পিটিয়ে থানায় হস্তান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক
সামির আসাফ, প্রতিনিধি ( ঢাকা )
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৪ অপরাহ্ন
তিতাস গ্যাসের ৫ কর্মী মিরপুরে ঘুষের অভিযোগে পিটিয়ে থানায় হস্তান্তর

রাজধানীর মিরপুরে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে ঘুষ দাবি করার অভিযোগে তিতাস গ্যাসের একজন ড্রাইভার ও চারজন কর্মকর্তাকে পিটিয়ে থানায় সোপর্দ করেছেন ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে স্বপ্ন সুপারশপের সামনে এই ঘটনা ঘটে।


তিতাস গ্যাসের ওই পাঁচ কর্মকর্তা ও কর্মচারী হলেন: ড্রাইভার বারেক শরীফ, অফিস সহকারী বিএম শাহ আলম, সহকারী ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান, সহকারী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও সহকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।


জানা যায়, মিরপুর ২ নম্বর কমার্স কলেজ সংলগ্ন সুপার হোস্টেলের গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য বৃহস্পতিবার সকালে তিতাসের একটি ভ্রাম্যমাণ টিম রাইজার নিয়ে সেখানে যায়। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর হোস্টেলের ম্যানেজার ওই টিমের সাথে যোগাযোগ করলে তারা পুনরায় গ্যাস সংযোগ দিতে তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। 


এ তথ্য জানার পর আবাসিক হোস্টেলের ছাত্ররা ঘুষের ব্যাপারে সচেতন হন এবং তাত্ক্ষণিকভাবে একটি ফাঁদ পাতে। তারা তিতাস কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে মিরপুর ১১ নম্বরে দেখা করার সময় নির্ধারণ করেন। সেখানে আগেই প্রস্তুত থাকা ছাত্ররা পাঁচজনকে হাতেনাতে ধরে গণপিটুনি দেয়। 


সুপার হোস্টেলের ছাত্র রাফি বলেন, “ঘুষ চাওয়ার খবর পেয়ে আমরা সবাই মিলে পরিকল্পনা করি। তারা যখন মিরপুর ১১ নম্বরে আসে, তখন আমরা তাদের ধরে ফেলি। ঘটনাস্থল থেকে আরও দুজন পালিয়ে যায়।” 


তিতাস কর্তৃপক্ষের ম্যানেজার মাকসুদুর রহমান অভিযোগ করেছেন, “হোস্টেলে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ছিল, যা সকালে বিচ্ছিন্ন করা হয়। ঘুষ চাওয়ার প্রমাণ পেলে তিতাস কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিত। তবে আমাদের সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা উচিত নয়।”


পল্লবী থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, “ঘটনাটি ঘটেছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময়। এর আগেও ওই হোস্টেলে অবৈধ গ্যাস সংযোগ থাকায় তিতাসের লোকজন টাকা নিয়েছিল। এখন তিতাসের পাঁচজনকে থানায় সোপর্দ করেছে সেনাবাহিনী এবং তাদের কোর্টে পাঠানো হবে।”


এ ঘটনার ফলে মিরপুরে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এবং অনেকেই সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এরকম ঘুষ চাওয়ার প্রবণতার প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের এই প্রতিবাদ নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে ঘুষের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনের গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে।