প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:১০
দেশে চলছে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ঘোষিত ২২ দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫। সরকারের এই বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে বরিশালের হিজলা উপজেলায় গত সাত দিনে ৯৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানটি শুরু হয়েছে ৪ অক্টোবর এবং চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত।
হিজলা উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, হিজলা থানা পুলিশ ও নৌপুলিশের যৌথ উদ্যোগে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইলিয়াস সিকদার এ পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে জেলেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এ ব্যাপারে হিজলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম জানান, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই সময় ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য সমুদ্র থেকে নদীমুখী হয়ে মিঠা পানিতে আসে। তাই ইলিশ যাতে নিরাপদে প্রজনন করতে পারে সেই উদ্দেশ্যে সরকার ২২ দিনের জন্য সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসন দিনরাত কাজ করছে। যদিও জনবল সীমিত, তবুও ইলিশ সম্পদ রক্ষায় প্রশাসনের প্রতিটি সদস্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। স্থানীয় জেলেদেরও এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে, কারণ এই সম্পদ রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।
৪ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে মোট ৯৯ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২১ জন জেলের কাছ থেকে ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক আটজন জেলের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযান চলাকালে জব্দ করা জাল ও মাছ ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে কোনোভাবেই মা ইলিশ ধরা যাবে না, অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, অভিযানের বাকি দিনগুলোতে আরও কঠোর তদারকি করা হবে। নদীতে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে যাতে কেউ নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করতে না পারে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইলিশ রক্ষা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটি দেশের প্রতিটি মানুষের সম্মিলিত দায়িত্ব। ইলিশ বড় হলে জেলেরা যেমন লাভবান হবে, তেমনি জাতীয় অর্থনীতিও আরও সমৃদ্ধ হবে।