প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৯:৪০
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সবজি চাষের জন্য সীমের বিচি রোপণের সময় মাটির নিচ থেকে একটি পুরনো গ্রেনেড উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। সোমবার সকাল ৯টার দিকে পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক ওমর মিয়া নিজ বাড়ির আঙিনায় গর্ত খুঁড়তে গিয়ে হঠাৎ এই গ্রেনেডটি দেখতে পান। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে সবাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেনেড উদ্ধারের এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং নিরাপত্তার জন্য সাধারণ মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখে।
স্থানীয়রা জানান, উদ্ধার হওয়া গ্রেনেডটি বহু পুরনো এবং ধারণা করা হচ্ছে এটি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের কোনো বিস্ফোরক। ১৯৭১ সালে ওই অঞ্চলের শমশেরনগর বিমানবন্দরে পাকিস্তানি বাহিনী অবস্থান করত, এবং সে সময়কার কোনো সামরিক তৎপরতার অংশ হিসেবেই এই গ্রেনেডটি মাটির নিচে থেকে থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।
এলাকাবাসী জানান, প্রথমে তারা বিষয়টি খেলনার মতো ভেবেছিলেন, তবে ধাতব গঠনের কারণে সন্দেহ হলে তারা পুলিশে খবর দেন। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে জানানো হয়।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির বলেন, খবর পেয়েই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে জানানো হয়েছে। তারা গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য এলাকায় ভীতি ছড়ালেও বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের গ্রাম থেকেও মানুষ ঘটনাস্থল দেখতে আসতে শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখে যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধকালীন সময়ের এ ধরনের অস্ত্র ও বিস্ফোরক এখনও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাটির নিচে রয়ে গেছে। এগুলো চাষাবাদ বা নির্মাণকাজের সময় হঠাৎ বেরিয়ে আসতে পারে, তাই যেকোনো সন্দেহজনক বস্তু দেখলেই স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো উচিত।