প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১১:৬
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ ও তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে এবং কুমিল্লার বিভিন্ন স্থান থেকে ভিডিও ধারণ ও ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত অনিক, সুমন, রমজান ও বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের সবাই মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পাঁচকিত্তা গ্রামের বাসিন্দা।
জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান রোববার সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ অভিযানে নামে এবং বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে এই পাঁচজনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গত ২৬ জুন রাতে এক নারী হোমনা থেকে বাবার বাড়ি বেড়াতে এসে মুরাদনগরের পাঁচকিত্তা গ্রামে ধর্ষণের শিকার হন। শহিদ মিয়ার ছেলে ফজর আলী কৌশলে ওই নারীর ঘরের দরজা খুলে তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় আশপাশের কয়েকজন ব্যক্তি ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে এবং পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
ঘটনার পর দিনেই ভুক্তভোগী নারী নিজেই বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলার ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করে অভিযান পরিচালনা করে। স্থানীয়দের কাছে মারধরের শিকার হয়ে ফজর আলী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান জানান, ধর্ষণের মামলার পাশাপাশি ভিডিও ছড়ানোর ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আরেকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। ভুক্তভোগীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে।
এই ঘটনার খবর এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। বিশেষ করে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সামাজিক অবক্ষয় ও মানসিক নির্যাতনের বিষয়টি সামনে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত না হলে সমাজে এমন অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়তে পারে। পুলিশের ভূমিকা ও দায়িত্বশীল পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানালেও বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।