প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১১:৯
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের অন্যান্য জেলার মতো মৌলভীবাজারেও সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দীর্ঘ ১০ দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে নেমেছে দর্শনার্থীদের ঢল। ঈদের চতুর্থ দিনেও প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে ছিল উপচে পড়া ভিড়, পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো জেলা।
জেলার সদর উপজেলার মনু ব্যারেজ, বড়লেখার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, শ্রীমঙ্গলের বধ্যভূমি, বাইক্কাবিলসহ অনেক এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিল পর্যটকদের পদচারণা। এসব দর্শনীয় স্থানে রীতিমতো মেলার আবহ তৈরি হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যে এসেছে নতুন গতি।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ঈদের চারদিনে প্রায় ৪ হাজার পর্যটক প্রবেশ করেছেন বলে জানিয়েছে বনবিভাগ। এই বিপুল সংখ্যক পর্যটকের ভ্রমণ ফি থেকেই রাজস্ব আদায় হয়েছে চার লাখেরও বেশি। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন পর্যটকরা, যাদের অভিজ্ঞতাও ছিল আনন্দময়।
পর্যটকদের কেউ কেউ হোটেল ভাড়া বেশি হলেও পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বনভূমি ও বন্যপ্রাণীর সৌন্দর্য দেখে অভিভূত, কেউবা আবার ভিডিও দেখে আগ্রহবশে ছুটে এসেছেন চায়ের রাজ্যে।
হোটেল-রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, টানা ছুটির কারণে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে গেছে বহুগুণে। জেলার প্রায় দুই শতাধিক হোটেল ও রিসোর্টে কোনো কক্ষ ফাঁকা নেই। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মতে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে মৌলভীবাজারের পর্যটনশিল্প আরও চাঙ্গা হবে।
জেলার প্রশাসন পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ছিল সক্রিয়। বন বিভাগের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ, সিপিজি সদস্য, থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী সম্মিলিতভাবে কাজ করছে যাতে পর্যটকেরা নিশ্চিন্তে ভ্রমণ উপভোগ করতে পারেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্ট প্রশাসন আশা করছে, মৌলভীবাজারের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে পর্যটকদের এমন অংশগ্রহণ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, পর্যটকদের প্রতি যত্নশীল থেকে পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে তারা সকল সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছেন, এবং পর্যটকবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সরকার প্রতিনিয়ত কাজ করছে।