প্রকাশ: ৪ জুন ২০২৫, ১৬:৩
কুয়াকাটার সৈকত এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর একের পর এক উচ্ছেদ অভিযানে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয় দোকানদার, ক্যামেরাম্যান ও স্টুডিও মালিকরা। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় তারা কাফনের কাপড় পরে, জুতা ও ঝাড়ু হাতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি সৈকতের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে এবং ইউএনও মোঃ রবিউল ইসলামের অপসারণের দাবিতে স্লোগানে মুখর হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটনের সৌন্দর্য রক্ষা ও পরিবেশ উন্নয়নের নামে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন বার বার তাঁদের উচ্ছেদ করছে। তালাবদ্ধ স্টুডিওর তালা ভেঙে কম্পিউটারসহ মূল্যবান মালামাল জব্দ করার অভিযোগও তোলেন তারা। এসব কর্মকাণ্ডে তাঁরা নিজেদের নিঃস্ব ও ক্ষতিগ্রস্ত বলে দাবি করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক স্টুডিও মালিক বলেন, “আমরা দিনের পর দিন সৈকতে কাজ করে পরিবার চালাই। হঠাৎ করে দোকান তুলে দিলে আমরা কোথায় যাবো? ইউএনও আমাদের কথা না শুনেই উচ্ছেদ চালাচ্ছেন।” আরও এক ক্যামেরাম্যান বলেন, “এত বছর ধরে কাজ করছি, এখন বলা হচ্ছে সৌন্দর্য নষ্ট করছি! তাহলে আগে তো কেউ কিছু বলেনি।”
বিক্ষোভকারীরা ইউএনওর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, সৈকতের সরকারি জমিতে প্রভাবশালীরা বহুতল ভবন নির্মাণ করলেও তাদের কিছু বলা হয় না, অথচ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থাও ছাড়াই উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এতে তাঁদের জীবিকা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
তাঁরা ইউএনওকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের অনুগত হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি নিরপেক্ষ আচরণ করছেন না। এজন্য তাঁরা তাঁর অপসারণ দাবি করেন এবং কুয়াকাটায় ব্যবসার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।
বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, “বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় স্টুডিওগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের মার্কেটের জায়গা দেওয়া হলেও তাঁরা যেতে চান না।”
তিনি বলেন, "পর্যটকবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।" ইউএনও জানান, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ও দুর্ভোগ বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি।