প্রকাশ: ৭ মে ২০২৫, ১৭:২৪
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস এনে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের গামবুট বিতরণ কর্মসূচি। রাসেলস ভাইপার নামক বিষধর সাপের আতঙ্কে যেখানে কৃষকরা ক্ষেতে নামতে ভয় পাচ্ছিলেন, সেখানে গামবুট পেয়ে তারা আবার ফসল ঘরে তোলার আশা করছেন। বুধবার দুপুরে চর দৌলতদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৫০ জন কৃষকের হাতে তুলে দেওয়া হয় সুরক্ষামূলক এই গামবুট।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খোকন উজ্জামান, পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা। চর দৌলতদিয়া ও উজানচর ইউনিয়নের চাষিদের মাঝে এই গামবুট বিতরণ করা হয়।
চাষি হোসেন আলি জানালেন, দীর্ঘদিন সাপের ভয়ে ক্ষেতে যেতে পারেননি। গামবুট পেয়ে এখন তিনি নিশ্চিন্তে মাঠে নামতে পারবেন। ফসল ঘরে তুলতে আর কোনো বাধা থাকছে না।
স্থানীয় গৃহিণী হামিদা বেগম বলেন, আগে সাপের কারণে ঘর থেকেও বের হতে সাহস হতো না। গামবুট পেয়ে এখন সপরিবারে ফসল তোলার কাজে যুক্ত হতে পারবেন। তাঁর মতে, এ উদ্যোগ শুধু জীবনের নিরাপত্তা নয়, খাদ্য উৎপাদনেও ভূমিকা রাখবে।
চাষি শুকুর মণ্ডল বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু ধান তুলেছেন, কিন্তু সাপের ভয়ে শ্রমিকরাও আসতে চাইতো না। গামবুট পেয়ে এখন তারা স্বস্তিতে কাজ করতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে রাসেলস ভাইপারের বিষয়টি নজরে আসে। কৃষকদের জীবন বাঁচাতেই গামবুট বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সব ইউনিয়নের চাষিদের মধ্যেও গামবুট দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালানো হবে, যাতে কেউ সাপে কাটলে দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া যায়। উপজেলা প্রশাসন সব সময় কৃষকের পাশে আছে এবং থাকবে।
স্থানীয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগ কৃষকদের মনে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এটি শুধুই একটি প্রতিরক্ষা সামগ্রী বিতরণ নয়, বরং গ্রামীণ কৃষি ব্যবস্থাকে সচল রাখার এক সাহসী পদক্ষেপ।