নোয়াখালীর সংবাদপত্র জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে জেলা শহরে সংবাদপত্র বিতরণের সঙ্গে জড়িত জনপ্রিয় বিপণনকর্মী বাহার মিয়া (৪৬) ফুসফুসের অসুখে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। গত রোববার বিকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বাহার মিয়া বেগমগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম এখলাশপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। রোববার রাত সাড়ে ১১টায় গ্রামের বায়তুল আমান জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলার সাংবাদিকরা জানান, বাহার মিয়া ছিলেন অত্যন্ত সৎ, মিষ্টভাষী ও পরিশ্রমী ব্যক্তি। রোদ-বৃষ্টি, ঝড় অথবা শীতের তীব্রতা - কোন কিছুই তাঁকে পত্রিকা বিতরণে বাধা দিতে পারত না। তিনি নিয়মিতভাবে সরকারি-বেসরকারি অফিস, সাংবাদিকদের প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যালয়ে পত্রিকা পৌঁছে দিতেন।
গত ২৭ এপ্রিল অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তাঁর অনুপস্থিতিতে জেলায় সংবাদপত্র বিতরণ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এ অবস্থায় গত ১ মে থেকে মাইজদী বাজারের মূলধারা এন্টারপ্রাইজও তাদের বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে।
চ্যানেল ২৪-এর সাংবাদিক সুমন ভৌমিক বলেন, "বাহার ভাইয়ের মতো নিষ্ঠাবান ও বন্ধুবৎসল মানুষ খুব কম দেখা যায়। তাঁর মৃত্যু আমাদের সকলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।" বাহার মিয়ার মৃত্যুতে জেলার সাংবাদিক সম্প্রদায়, পত্রিকার পাঠক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাহার মিয়া গত ২৭ এপ্রিল প্রচণ্ড কাশি নিয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। এক সপ্তাহ চিকিৎসার পর ডাক্তাররা তাঁর দেহে ক্যান্সারের জীবাণু শনাক্ত করেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
বাহার মিয়ার আকস্মিক মৃত্যু এবং পত্রিকা বিতরণ ব্যবস্থার এই বিপর্যয় জেলার সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এখন পর্যন্ত তাঁর শূন্যস্থান পূরণের কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।