বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জে মৎস্য অধিদপ্তর ও কোস্টগার্ডের যৌথ অভিযানে অবৈধভাবে বিষ প্রয়োগে ধরা পড়া বিশাল পাইজাল ও পাঙ্গাশ মাছের পোনা জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মোহাম্মদ আলম নেতৃত্ব দেন। শুক্রবার রাতভর প্রথম দফায় অভয়াশ্রমের বামনার চর গজারিয়া নদীতে বিশাল এক পাইজাল জব্দ করা হয়।
জব্দকৃত পাইজালের বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখ টাকা। দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া পরবর্তী কার্যে ব্যবহারের অনুপযোগী এই জাল রাতেই অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এতে নদী পরিবেশ রক্ষায় দফায় দফায় অভিযান অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় মৎস্য অধিদপ্তর।
শনিবার ভোরে মেহেন্দিগঞ্জের বাগরজা এলাকা থেকে আটক করা হয় সাড়ে সত্তর কেজির মতো পাঙ্গাশ মাছের পোনা। এসব পোনা দেশীয় আইন অমান্য করে অবৈধভাবে বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে পরিবহণ করা হচ্ছিল। অভিযানকারী কর্মকর্তা ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা দ্রুত সদ্যজীবিত পোনা উদ্ধার করেন।
আলম জানান, অবৈধ ব্রিডিং ও পরিবহণ বন্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে গুপ্তসংকেত পেয়ে অভিযানে এরকম মাছের পোনা জব্দের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে পাইজালের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত এলাকার মাছ সংরক্ষণে মারাত্মক নাশ কাণ্ড ঘটায় বিরক্ত স্থানীয় মৎস্যজীবীরা।
জব্দকৃত পাঙ্গাশ মাছের পোনা কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছাড়াই স্থানীয় এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়। এতে স্থানীয় দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের মাঝে খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের সার্বিক তত্বাবধানে এ ধরনের অভিযান মৎস্যসম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, নদী-মৎস্য আহরণ থেকে জাতীয় আয় বছরে কোটি কোটি টাকার বেশি আসে। সেজন্য পরিবেশবান্ধব ও আইনসিদ্ধ পদ্ধতিতে মৎস্যসম্পদ আহরণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ অঞ্চলে আরও বেশ কিছু স্থান থেকে অবৈধ জাল-ফাঁদ জব্দের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কোস্টগার্ড ও মৎস্য অধিদপ্তর। বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টহল দল রাতে নদী-পথের নজরদারি বাড়িয়ে তুলছে।
আলম বলেন, জাতীয় মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা চাই। অবৈধ জালদানি বন্ধে মর্যাদাশীল স্থানীয়রা যদি নিজে এগিয়ে আসে, তবে নদীমাতৃক জীবনমান উন্নয়নে তা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে।