বরিশালের জনগণ ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ৬ লেনের মহাসড়ক নির্মাণ এবং চীন সরকারের অর্থায়নে বরিশালে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। রোববার দুপুরে বরিশাল নগরীর সদর রোডে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়কটি বর্তমানে ২ লেনের সংকীর্ণ রূপে রয়েছে। প্রতিনিয়ত এই সড়কে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে, যার ফলে জানমাল হুমকির মুখে পড়েছে। তারা জানান, প্রতিদিন এই মহাসড়কে হাজার হাজার বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করে। কিন্তু রাস্তাটি সরু হওয়ায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের চলাচল করতে হয়।
বিশেষ করে পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মধ্যে যে আশার সঞ্চার হয়েছিল, তা এখন ভোগান্তিতে রূপ নিয়েছে। কারণ, ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পৌঁছাতে এখনও চার ঘণ্টার বেশি সময় লাগে, যা ব্যবসা-বাণিজ্য ও সাধারণ যাতায়াতের জন্য মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করছে। বক্তারা বলেন, রাস্তা ৬ লেনে উন্নীত হলে একদিকে দুর্ঘটনা ও যানজট কমবে, অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি ও পর্যটন খাতে বিপুল অগ্রগতি সাধিত হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, চীন সরকার বাংলাদেশে বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা জোর দাবি জানান, বরিশাল বিভাগে যেন অন্তত একটি আধুনিক ও উন্নত মানের বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মিত হয়। দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১ কোটি মানুষ এখনও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ছুটে যান। বরিশালে এমন একটি হাসপাতাল স্থাপন হলে চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য হবে এবং চাপ কমবে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে।
চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট এবায়েদুল হক চান বলেন, উন্নয়ন ও চিকিৎসা—দুটোই মানুষের মৌলিক অধিকার। দক্ষিণাঞ্চলকে অবহেলার অবসান হওয়া উচিত। তিনি ভাঙ্গা-কুয়াকাটা ৬ লেন মহাসড়ক ও বরিশালে বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরেন।
এছাড়াও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলার সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী বলেন, দক্ষিণাঞ্চল বহুদিন ধরেই বঞ্চনার শিকার। চিকিৎসা, অবকাঠামো, যোগাযোগ—সবখাতেই উন্নয়নের ছোঁয়া কম। তিনি বলেন, সময় এসেছে সরকারকে এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
মানববন্ধনে আরও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন এবং এই দাবিগুলো বাস্তবায়নে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।